E-Paper

মেঘ কাটতেই দুর্গাপুজোর বাজারে রোদ

পুজোর মুখে টানা বৃষ্টির জেরে গত কয়েকদিন বিক্রিবাটা প্রায় শূন্যে নেমে এসেছিল। ক্রেতাশূন্য দিন কেটেছে তাঁদের।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১১
রবিবার জমে ওঠেছে পুজোর বাজার। ডোমকলে।

রবিবার জমে ওঠেছে পুজোর বাজার। ডোমকলে। ছবি সাফিউল্লা ইসলাম।

নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টিতে মার খাচ্ছিল দুর্গাপুজোর বাজার। আকাশের টানা মুখ ভার চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল ব্যবসায়ীদের, যাঁরা সারা বছর ধরে এই সময়ের বিক্রিবাটার দিকে তাকিয়ে থাকেন। অবশেষে মেঘ সরে রোদের আভাস পুজোর বেচাকেনায়। দুর্গাপুজোর আর দু’সপ্তাহও বাকি নেই। তার আগে রবিবার জেলার বিভিন্ন বাজারে সকাল থেকেই ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়ল।

আবহাওয়ায় ঠান্ডা হাওয়ার শিরশিরানি এখনও নেই। তবে সকালে ঝরে পড়ে শিউলি আর নীল আকাশ জানান দিচ্ছে, আর দেরি নেই। আগামী শনিবার মহালয়া। হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। রবিবার সকাল থেকেই তাই পুজোর বাজার করতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন অনেকে। রবিবাসরীয় বাজারে ভিড় দেখে আশ্বস্ত বোধ করছেন ব্যবসায়ীরা। বহরমপুর থেকে কান্দি, ডোমকল থেকে জঙ্গিপুর— সর্বত্রই এ দিন বাজারে ক্রেতার ঢল নামে। কান্দি মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদকের মুখে চওড়া হাসি। তারকেশ্বর প্রামাণিক বলছেন, “শনিবার বিকেল থেকেই বাজারে ক্রেতার ঢল। গভীর রাত পর্যন্ত বেচাকেনা হয়েছে। আজ সকাল থেকে বাজারে ক্রেতারা এসেছেন।
আমরা খুশি।”

পুজোর মুখে টানা বৃষ্টির জেরে গত কয়েকদিন বিক্রিবাটা প্রায় শূন্যে নেমে এসেছিল। ক্রেতাশূন্য দিন কেটেছে তাঁদের। পুজোর মুখে এমন পরিস্থিতি দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছিল ব্যবসায়ীদের। এ দিনের পর খুশি ব্যবসায়ীরা। তবে এ দিন হরিহরপাড়া এলাকার বাজারগুলিতে প্রত্যাশিত ভিড় ছিল না ক্রেতার। তবে তাতে ব্যবসায়ীরা তেমন চিন্তিত নন। ব্যবসায়ীদের দাবি, “এলাকার ক্রেতারা পুজোর মুখে কেনাকাটা করতে অভ্যস্ত। আমাদের এখানে এখনও পুজোর বাজারের সময় পেরিয়ে যায়নি।’’ ব্যবসায়ী নওসাদ শেখ বলেন, “আমাদের খরিদ্দারেরা মূলত কৃষিজীবী। এখন সকলে খেতের কাজে ব্যস্ত। আমরা নিশ্চিত, আর কয়েক দিন পর থেকে তাঁরা বাজারে আসবেন।’’ বেলডাঙা, লালবাগ, জিয়াগঞ্জ এলাকায় গত কয়েক দিন বাজারে লোকজন ছিল না। এ দিন সে সব জায়গায় বাজারে ক্রেতার ভিড় ছিল। ব্যবসায়ীদের দাবি, পুজোর আগে হাতে আরও একটি রবিবার আছে। এ দিন থেকে বাজার জমতে শুরু করেছে। এখন রোজই এমন ভিড় হওয়ার আশা। রঘুনাথগঞ্জ বাজারে সকাল থেকেই চুটিয়ে বেচাকেনা করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এলাকার ব্যবসায়ীদের দাবি, গ্রামীণ এলাকার ক্রেতাদের শহরের বাজারে আসার জন্য সরাসরি টোটো নেই। দু’ থেকে তিনটি টোটো বদলে শহরের বাজারে পৌঁছতে তাঁদের অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। তাই অনেকে শহরের বাজারে আসতে পারছেন না। কান্দি বাজারে সকাল থেকেই ক্রেতারা দোকানে ভিড় করেছেন। ব্যবসায়ী মহিতোষ দত্ত বলেন, “আজ বাজারে প্রচুর ক্রেতা এসেছেন। আমরা নাওয়াখাওয়ার সময় পাচ্ছি না।’’

বহরমপুর শহরের গোরাবাজার, খাগড়া বাজার-সহ একাধিক এলাকায় শপিং মলগুলিতে ক্রেতারা চুটিয়ে কেনাকাটা করেন। ছোট দোকানগুলিতে ভিড় তেমন ছিল না। মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সাধারণ সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “শনিবার বিকেল থেকে বাজারে লোকজন আসছেন। বড় দোকান ও শপিং মলগুলিতে ভিড় কিছুটা বেশি হলেও ছোট দোকানগুলির বিক্রিবাটা প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না। বহরমপুর থেকে মুর্শিদাবাদ, রঘুনাথগঞ্জ, কান্দি সর্বত্রই ছোট ব্যবসায়ীদের অবস্থা খুবই খারাপ।” বহরমপুর ক্লথ মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিষ্ণু দত্ত বলেন, “সার্বিক ভাবে বহরমপুরে পুজোর বাজার খুবই খারাপ। দু’সপ্তাহ পর পুজো। কিন্তু এখনও বাজার ফাঁকা।” তিনি বলেন, “পাটের দাম নেই। গ্রামীণ এলাকায় মানুষের হাতে টাকা কম। তার উপর বহরমপুরে একমুখী রাস্তা করায় ক্রেতা আসতে চাইছেন না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Murshidabad

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy