Advertisement
E-Paper

নাবালিকার বিয়ে নয়, আর্জি পুতুল নাচেও

নাবালিকা বিয়ে রুখতে মাস ছয়েক আগে এগিয়ে এসেছিলেন নাকাশিপাড়ার পুরোহিতরা। তাঁরা শপথ নিয়েছিলেন, নাবালিকার বিয়ে দেবেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ১৩:০১
সচেতনতা: স্কুল-মাদ্রাসায় আয়োজন করা হয়েছে পুতুলনাচ। তারই মাধ্যমে পড়ুয়াদের বোঝানো হচ্ছে বাল্য বিবাহ ও নারী পাচারের ভয়ঙ্কর পরিণতি। নাকাশিপাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

সচেতনতা: স্কুল-মাদ্রাসায় আয়োজন করা হয়েছে পুতুলনাচ। তারই মাধ্যমে পড়ুয়াদের বোঝানো হচ্ছে বাল্য বিবাহ ও নারী পাচারের ভয়ঙ্কর পরিণতি। নাকাশিপাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

নাবালিকা বিয়ে রুখতে মাস ছয়েক আগে এগিয়ে এসেছিলেন নাকাশিপাড়ার পুরোহিতরা। তাঁরা শপথ নিয়েছিলেন, নাবালিকার বিয়ে দেবেন না। যদি কোনও পুরোহিত নাবালিকার বিয়ে দিয়ে আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েন, সংগঠনও তাঁর পাশে থাকবে না। অথচ গত মাসখানেকের মধ্যেই বীরপুর ও পালপাড়ায় দু’জন নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেছে প্রশাসন।

এ বারে নাবালিকাদের বিয়ে রুখতে পুতুলনাচকে বেছে নিল নাকাশিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতি। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় সচেতনতার কাজও শুরু হয়েছে জোর কদমে। মঙ্গলবার নাকাশিপাড়ার ধুবির নজরুল স্মৃতি জুনিয়র হাইমাদ্রাসা, বেথুয়াডহরি মাতঙ্গিনী উচ্চবালিকা বিদ্যালয় এবং আকন্দডাঙা হাই মাদ্রাসায় পুতুল নাচের মাধ্যমেও পড়ুয়াদের বোঝানো হয় বাল্য বিবাহ ও নারী পাচারের ভয়ঙ্কর পরিণতি। বুধবার ও বৃহস্পতিবার নাকাশিপাড়ার আরও ৬ টি স্কুলে এ ভাবে সচেতন করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক আজিজুর রহমান।

নজরুল স্মৃতি জুনিয়র হাই মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া রূপসা খাতুন বলছে, “এ দিনের পুতুলনাচ থেকে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। নাবালিকার বিয়ে হলে আমরা তার বাড়ির লোকজন সচেতন করবো। কথা না শুনলে প্রশাসনকেও জানাব।”

নাকাশিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তন্ময় গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, “পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমেও এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে। স্কুলের পড়ুয়ারা পুতুল নাচ খুব পছন্দ করে। সেই কারণে সচেতন করতে ওই মাধ্যমটাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।”

গত এক বছরে নদিয়া জেলায় ২৩১ টি নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেছে প্রশাসন। তার মধ্যে রানাঘাটে দু’টি এবং নাকাশিপাড়ায় একটি ও ধানতলায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। বাকি বিয়ের ক্ষেত্রে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

নদিয়া জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান রিনা মুখোপাধ্যায় বলছেন, “নাবালিকা বিয়ে বন্ধে ২০০৬ সালে দেশে কড়া আইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেই আইনে মামলা না করে শুধু মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে আবার অন্যত্র গিয়ে নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”

জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক অনিন্দ্য দাস বলছেন, “নাবালিকা বিয়ে রোধে কন্যাশ্রী-সহ একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশ স্কুলে স্কুলে স্বয়ংসিদ্ধা কমিটি গড়ে সচেতন করছে।”জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলছেন, “যারা নাবালিকা বিয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’

Puppet show Minor Marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy