E-Paper

বহু সরকারি শৌচালয় তৈরি হয়ে পড়ে, উঠছে প্রশ্ন

রানাঘাট ২ ব্লকে আড়ংঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের চূর্ণীর ঘাটে থাকা শৌচালয়টিও দিনের পর দিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আবর্জনা স্তূপে ঢেকে রয়েছে ঘাট চত্বর।

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩৭
তৈরির পর থেকেই তালাবন্ধ চূর্ণীর পাশের এই শৌচালয়। বুধবার আড়ংঘাটায়।

তৈরির পর থেকেই তালাবন্ধ চূর্ণীর পাশের এই শৌচালয়। বুধবার আড়ংঘাটায়। নিজস্ব চিত্র।

সরকারি তহবিলের লক্ষ-লক্ষ টাকা খরচ করে শৌচালয় তৈরি হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ব্যবহার হয় না। কোথাও আবর্জনা, কোথাও আবার আগাছায় ঢেকেছে বছর কয়েক আগে তৈরি হওয়া শৌচালয়। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কেবল সরকারি তহবিল খরচের লক্ষ্যেই কি গ্রামে-গ্রামে শৌচালয় তৈরি হয়েছে? সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্বই বা কার?

রানাঘাট ১ ব্লকের পায়রাডাঙা পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে পার নিয়ামতপুর গ্রাম। সেই গ্রামের প্রধান সড়কের পাশে প্রতি দিন বসে আনাজ ও মাছ বাজার। তার পাশেই তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে একটি শৌচালয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ঘটা করে এক সময় ওই শৌচালায় উদ্বোধন হয়েছিল। বর্তমানে শৌচালয়ের কাছেই যাওয়া যায় না। জঙ্গলে ঢেকে রয়েছে সেটি। পায়রাডাঙার পাশের পঞ্চায়েত আনুলিয়া। সেখানেও চূর্ণী নদীর ঘাটের কাছে শ্রীনাথপুরে রয়েছে সরকারি শৌচালয়। সেটিও তালাবন্ধ।

রানাঘাট ২ ব্লকে আড়ংঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের চূর্ণীর ঘাটে থাকা শৌচালয়টিও দিনের পর দিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আবর্জনা স্তূপে ঢেকে রয়েছে ঘাট চত্বর। বুধবার সকালে কথা হচ্ছিল নদীতে স্নান করতে আসা এলাকারই বাসিন্দা তপন বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, "২০১৮ সাল নাগাদ শৌচালয়টি তৈরি হয়। নদীতে স্নানে আসা মানুষজন যাতে পোশাক বদল করতে পারেন, সেই জন্যই প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যয় করে এই শৌচালয় তৈরি করা হয়েছিল। অথচ এখন সেটি পুরোপুরি বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। "

শুধু আড়ংঘাটা, পায়রাডাঙা বা আনুলিয়া নয়। প্রায় প্রতিটি পঞ্চায়েতেই একের পর এক সরকারি অর্থে তৈরি হওয়া শৌচালয় বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের অনেকের মতেই, সরকারি ভাবে বিভিন্ন খাতে যে অর্থ বরাদ্দ হয়, তা খরচের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে। সময়ের মধ্যে সেই অর্থ খরচ করতে না পারলে স্বাভাবিক নিয়মেই তা ফেরত যায়। কিন্তু ওই অর্থ খরচ করতে না পারা মানে প্রশাসনের ব্যর্থতা। সেই ব্যর্থতা ঢাকতে বিভিন্ন সময়ে অপরিকল্পিত ভাবে দ্রুততার সঙ্গে কোথাও সাড়ে তিন লক্ষ, কোথাও আবার তার চেয়েও বেশি খরচে শৌচালয় তৈরি হয়েছে। যদিও সেগুলির ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে নির্দিষ্ট রূপরেখার অভাব থাকায় গ্রামে-গ্রামে শৌচালয়গুলির এই দশা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, চাহিদা অনুযায়ী গ্রামের জনবহুল এলাকা যেমন বাজার-হাট, বাস স্টপ, স্কুল, নদীর ঘাট ইত্যাদি জায়গায় তৈরি করা হয় শৌচালয়গুলি। তার পর সেগুলিকে নির্দিষ্ট কোনও কমিটি বা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়। নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) অনুপকুমার দত্ত বলেন, "এমনটা নয় যে সরকারি অর্থ খরচের লক্ষ্যেই শৌচালয়গুলি তৈরি করা হয়েছে। শৌচালয় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য স্থানীয় কমিটি বা সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কেন সেগুলি বন্ধ, সে ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখছি।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy