ছবি: সংগৃহীত
ফের স্ক্রাব টাইফাসের ছায়া পড়ল নবগ্রামে।
দিন কয়েক আগে স্ক্রাব টাইফাসে মারা গিয়েছেন নবগ্রামের এক যুবক। সে রেশ থিতিয়ে যাওয়ার আগেই ওই এলাকার বছর চল্লিশের এক মহিলা একই রোগে আক্রান্ত হলেন। অতশী মণ্ডল নামে ওই মহিলা প্রবল জ্বর নিয়ে রবিবার থেকে বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোমবার রক্ত পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে তিনিও স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত। নবগ্রামের অমরকুণ্ডুতে সে খবর পৌঁছতেই আতঙ্ক ছড়ায়। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৬ জন স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে এক জনের।
মুর্শিদাবাদের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলছেন, ‘‘মঙ্গলবার বিডিও থেকে বিএমওএইচ— প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে ডেঙ্গি এবং স্ক্রাব টাইফাস নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘স্ক্রাব টাইফাস নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। এ রোগের নির্দিষ্ট ওষুধ আছে। হাসপাতালগুলিতে ওই ওষুধ রয়েছে। যেখানে নেই, পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
নবগ্রামের অমরকুণ্ডুর পীযূষকান্তি মণ্ডল বলছেন, ‘‘তরুণ সরকারের মৃত্যুর পরে পঞ্চায়েতের কর্মীরা এসে গ্রামে ব্লিচিং ছড়িয়ে গিয়েছিলেন। তার পর যে কে সেই, স্বাস্থ্য দফতর আরও একটু সচেতন না হলে স্ক্রাব টাইফাসও তো ডেঙ্গির চেহারা নেবে!’’
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল লাগোয়া একটি বেসকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অতশী। ওই মহিলার ছেলে সব্যসাচী বলেন, ‘‘পাঁচ দিন ধরে মায়ের জ্বর। সঙ্গে অসহ্য পেট ব্যথা ও মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়। গত রবিবার মা’কে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোমবার রক্ত পরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা জানান, রোগটা স্ক্রাব টাইফাস।’’
গত ২৩ নভেম্বর নবগ্রামের অমরকুণ্ডুর বছর তেত্রিশের তরুণ সরকারের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের বাড়ি থেকে একশো মিটারের মধ্যেই অতশীর বাড়ি। অতশী অবশ্য বলছেন, ‘‘আগের থেকে একটু সুস্থ আছি। জ্বরটা একটু কমেছে বটে। তবে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা রয়েছে।’’
অতশী মণ্ডলের চিকিৎসক কৌশিক ঘোষ বলেন, ‘‘খুব জ্বর ও মাথায় ও পেটে যন্ত্রণা নিয়ে উনি হাসপাতালে ভর্তি হন। রক্ত পরীক্ষায় স্ক্রাব টাইফাস ধরা পড়ে। তবে ওঁর মনে অসম্ভব জেদ রয়েছে। স্ক্রাব টাইফাসে ভয় না পেয়ে এ ভাবেই নিজে শক্ত থাকা প্রয়োজন।’’
নবগ্রামের বিডিও অমূল্য সরকার বলেন, ‘‘স্ক্রাব টাইফাস থেকে মুক্তির এক মাত্র উপায় সচেতনতা ও চিকিৎসা। ডেঙ্গির মতো ওষুধ স্প্রে বা ফগিং করে স্ক্রাব টাইফাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। স্বাস্থ্য শিবির করে মানুষকে সচেতন করার কাজ চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy