ফাইল চিত্র।
বাড়ির সামনে থেকে উধাও জমাটি আড্ডা। শুনশান বাড়ির সামনে সারি পাতা চেয়ার। এখন সবই ফাঁকা। মন্ত্রী জাকির হোসেনের বাড়িতে এখন শুধু পুলিশের পাহারা আর দেখভালের কর্মী আসরাফুল।
২৪ বছর ধরে রয়েছেন জাকিরের বাড়িতে। বছর বিয়াল্লিশের আশরাফুলের মনে পড়ে না এমন শুনশান অবস্থা আগে কখনও এসেছে এই বাড়িতে।
বিস্ফোরণের রাতেই জাকিরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। পর দিনই ছোট মেয়ে লীনা ও একমাত্র ছেলে জাহিদকে নিয়ে কলকাতায় রওনা দেন স্ত্রী মীরা বিবি।
আশরাফুল বলছেন, “সকাল ৬টায় উঠে হাঁটতে বেরোতেন একাই। ফিরতেন জনা পঁচিশ লোক নিয়ে। বাড়ির মূল লোহার গেটের সামনেই চেয়ার পেতে সকাল ৯টা পর্যন্ত চলত আড্ডা।’’ কেউ আসত আবদার নিয়ে, কেউ বা সমস্যা নিয়ে। হাসি, ঠাট্টায় চলত আড্ডা। এই আড্ডা দেখে বোঝার জো ছিল না এতগুলি ব্যবসা চালান তিনি। এই আড্ডায় বসে কখনও সে সব ব্যবসার কথা তুলতেন না। তুলতেন না রাজনীতির কথাও।
দুর্ঘটনার পর থেকে সেই বাড়িটা যেন খাঁ খাঁ করছে। মনটা তাই ভাল নেই কারওরই। মাঝে মধ্যে ফোন করে জানছি কেমন আছেন তিনি।
ব্যস এইটুকুই।
মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বাড়িতেই রয়েছে সুতি থানার ৫ পুলিশ কর্মীর ক্যাম্প। এক পুলিশ কর্মী ক্রমান্বয়ে রয়েছেন পাহারায়। জাকিরের জন্য নিরাপত্তা দরকার কখনও ভাবেনি অরঙ্গাবাদ। সেই তিনিই বোমা বিস্ফোরণে ক্ষত বিক্ষত হয়ে কলকাতার হাসপাতালে।
মন্ত্রীর বাড়ির সামনেই থাকেন সারিফুল হক। বলছেন, “আড্ডা শেষে বেরিয়ে যেতেন সকাল ৯টা নাগাদ। কখনও জঙ্গিপুরে নিজের চাল কলে বা ডাল মিলে। কখনও বা রঘুনাথগঞ্জে নিজের অফিস ‘জনতার দরবার’য়ে। দেড়টা নাগাদ বাড়ি ফিরে খাওয়া দাওয়া। বিশ্রাম। বিকেলে বেরিয়ে থাকতেন অরঙ্গাবাদের আশপাশেই নিজের একাধিক অফিসে। রাত ৯টায় বাড়ি ফিরে খাওয়া দাওয়া। ফের বেরিয়ে রাতে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নিজের অতিথি নিবাসে কাটিয়ে বাড়ি ফিরে ঘুম। এই রুটিনের কোনও বদল দেখিনি মন্ত্রী হওয়ার পরও।”
সারিফুলের কথায়, “এ ধরনের হামলা হতে পারে গোটা অরঙ্গাবাদের মানুষের কাছে তা ছিল কল্পনারও অতীত।”
প্রতিবেশী মোক্তার শেখ বলছেন, “উনি ঠিক রাজনীতির লোক নয়। সহজ সরল মানুষ। অল্পতেই সকলকে বিশ্বাস করে ফেলেন।”
বাড়ির মধ্যে আমের গাছে মুকুল এসেছে। নানা ধরণের গাছ বাড়ির উঠোনে, যেন সাজানো ছবি। সবই তেমনই আছে, শুধু তিনি নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy