E-Paper

গণপ্রহারে ধৃত বহু, স্তব্ধ গ্রাম

সোমবার কিছু পড়ুয়া স্কুলে এসেছিল, কিন্তু মঙ্গলবার থেকে আর কেউ স্কুলে আসছে না।

সাগর হালদার  

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:১৬
বন্ধ দোকান, শুনশান গ্রাম। বুধবার নিশ্চিন্তপুরে।

বন্ধ দোকান, শুনশান গ্রাম। বুধবার নিশ্চিন্তপুরে। ছবি: সাগর হালদার।

স্কুলে আসেনি কোনও ছাত্র। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র সুনসান। দোকানপাট বন্ধ, পথেঘাটে লোক নেই বললেই চলে। বালক খুনের পরে গণপ্রহারে প্রতিবেশী এক দম্পতি মারা যাওয়ার মামলায় তেহট্টের নিশ্চিন্তপুরে ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে পুলিশ। নতুন করে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করার জেরে বুধবার সকাল পর্যন্ত ধৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫-য়। তারই জেরে প্রায় জনশূন্য নিশ্চিন্তপুর বটতলা পাড়া তথা দক্ষিণপাড়া গ্রাম।

বুধবার ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নিহত বালক স্বর্ণাভ বিশ্বাস যে নিশ্চিন্তপুর নতুনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ছিল, বটতলা পুজোমণ্ডপের পিছন সেই স্কুল একেবারে নিস্তব্ধ। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, সেখানে ৯১ জন পড়ুয়া রয়েছে। গত শনিবার স্বর্ণাভর মৃতদেহ উদ্ধার ও গণপ্রহারের ঘটনার জেরে পড়ুয়াদের নিয়ে নীরবতা পালন করে স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সোমবার কিছু পড়ুয়া স্কুলে এসেছিল, কিন্তু মঙ্গলবার থেকে আর কেউ স্কুলে আসছে না। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মানিক সরকার বলেন, “আতঙ্কের কারণেই সম্ভবত বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না অভিভাবকেরা। কেউ না আসায় দু’দিন মিডডে মিলও রান্না হয়নি।” ওই স্কুলের সামনে ৮০ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও একই পরিস্থিতি। সেখানে শিশু ও প্রসূতি মিলিয়ে মোট ৬২ জন রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে কারও দেখা নেই। সেখানকার দিদিমণি অর্চনা মণ্ডল হালদার বলেন, “রান্নাও হয়নি দু’দিন ধরে।”

পুলিসের দাবি, গণপ্রহারে নিহত উৎপল মণ্ডল ও তার স্ত্রী সোমা মণ্ডলই তাদের প্রতিবেশী স্বর্ণাভকে খুনে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিল। তবে খুনের কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে। পুলিশের দাবি, শুক্রবার দুপুরে স্বর্ণাভ এমন কিছু উৎপলকে বলেছিল, যার জেরে রাগের মাথায় উৎপল তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে বলে অনুমান করা হচ্ছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) উত্তম ঘোষ এ দিন বলেন, “যারা এই ব্য়াপারে বলতে পারত, তাদের মধ্যে দু’জন তো মৃত। আর এক জন, ওই দম্পতির বড় বৌমা গণপ্রহারে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ফলে পুরোটা জানা যাচ্ছে না।” স্বর্ণাভর বাবা সত্যেন বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “আমার ছেলে কারও সঙ্গে খারাপ ভাবে কথা বলত না। সেই কারণেই গ্রামের সকলে তাকে ভালবাসত।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tehatta

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy