Advertisement
১৮ মে ২০২৪

হাতে স্মার্টফোন দেখে গলায় চাকু বালকের

বছর দশেকের ছেলের হাত দিয়ে নিজের মোবাইল ফোন বাড়ি পাঠিয়েছিলেন জাকির হোসেন। বলেছিলেন, ‘‘নিয়ে গিয়ে চার্জে বসা। আমি দোকানে চা খেয়ে আসছি।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০১:২৯
Share: Save:

বছর দশেকের ছেলের হাত দিয়ে নিজের মোবাইল ফোন বাড়ি পাঠিয়েছিলেন জাকির হোসেন। বলেছিলেন, ‘‘নিয়ে গিয়ে চার্জে বসা। আমি দোকানে চা খেয়ে আসছি।’’

তখন সন্ধে নামছে।

সটান বাড়ি যাওয়ার বদলে ছেলে আজিজুল দাঁড়িয়ে পড়েছিল রাস্তার ধারে। হাতে স্মার্টফোন পেয়েছে বলে কথা! বেলডাঙার কাজিসাহা গ্রামে রাস্তায় দাঁড়িয়েই সে ফোনে খুটখাট করছিল, গান শুনছিল।

ব্যাপারটা নজরে পড়ে গ্রামেরই মনিরুল শেখের (নাম পরিবর্তিত)। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া আজিজুলের চেয়ে সে বয়সে অনেকটাই বড়। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। জাকিরের অভিযোগ, সে আজিজুলের কাছ এসে ফোনটা চায়। আজিজুল দিতে রাজি হয়নি। তাতে খেপে উঠে সে আজিজুলকে ঠেলে পাশের মাঠে নিয়ে যায়। তার পকেটে চাকু ছিল। সেটাই বের করে সে ছোট ছেলেটির গলায় চেপে ধরে।

সামান্য মোবাইলের জন্য সহপাঠী বা ছোট ছেলেমেয়েকে খুন হালফিলে কম ঘটেনি। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত নিতান্ত নাবালক। তবে আজিজুলের ভাগ্য ভাল, চাকুর চাপে গলা থেকে রক্ত ঝরতে শুরু করলেও সে মরেনি। বরং রক্ত দেখে মনিরুলই ভয় পেয়ে ফোন ফেলে রেখে পালায়। আজিজুল পড়ে থাকে গ্রামের একটি কবরস্থানের পাশে। রাত হয়ে গেলেও সে বাড়ি না ফেরায় খোঁজ পড়ে গিয়েছিল। প্রায় মধ্যরাতে ছেলেকে খুঁজে পান জাকির। তাকে বেলডাঙা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

শুক্রবার বেলডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন জাকির। পুলিশ জানায়, ঘটনাটি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধের। কিন্তু একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় মনিরুলের বাবা শেখ আকবর (নাম পরিবর্তিত) জাকিরের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করছিলেন। ছেলেকেও সকলের সামনে ভীষণ বকাবকি করেন তিনি।

কিন্তু জাকির তাতে নিরস্ত হননি। তবে ২ মার্চ, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাধ্যমিক চলায় বেলডাঙা হরেকনগর এ এম ইনস্টিটিউটের ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। মাধ্যমিক শেষ হওয়ার পরের দিন তা দায়ের হয়। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত স্কুলের ছাত্র হওয়ায় ধরপাকড়ের আগে বিষয়টি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হতে চাইছেন অফিসারেরা। প্রয়োজনে যে কোনও পদক্ষেপই করা হতে পারে বলে বেলডাঙা থানা সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Smartphone Snatching
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE