Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বুজরুকি বন্ধ হতেই অবরোধ গ্রাম-পথে

বৃহস্পতিবার সকালে সেই অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়ালেন প্রায় শ’তিনেক গ্রামবাসী।

কাচ ভাঙল পুলিশের গাড়ির।

কাচ ভাঙল পুলিশের গাড়ির।

নিজস্ব সংবাদদাতা
স্বরূপপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৮
Share: Save:

বুজরুকি বন্ধ হয়েছে বটে, তবে মানুষের অন্ধবিশ্বাস যে রয়ে গিয়েছে, হরিহরপাড়ার স্বরূপপুর এলাকায় রাজ্য সড়ক রুখে বৃহস্পতিবার তারই জানান দিলেন গ্রামবাসীরা।

বৃহস্পতিবার সকালে সেই অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়ালেন প্রায় শ’তিনেক গ্রামবাসী। অনর্গল ইট বৃষ্টিতে গুরুতর জখম হলেন হরিহরপাড়া থানার ওসি আব্দুস সালাম-সহ অন্তত দশ জন পুলিশকর্মী। ভাঙচুর চালানো হল বেশ কয়েকটি পুলিশের গাড়িতেও। পরে অন্য থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে সে অবরোধ তুললেও এলাকায় উত্তেজনা থাকায় শুরু হয়েছে পুলিশি টহল।

হরিহরপাড়ার খলিলাবাদ গ্রামে গত দেড় মাস ধরে দই পড়া দিয়ে রোগ সারানোর দাবি করছিলেন স্থানীয় এক দর্জি আমজাদ আলি। ভিড় ক্রমেই বাড়ছিল। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে ওঠায় গত সোমবার পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা গিয়ে আমজাদের সেই কারবার বন্ধ করে দেন। বিপত্তি তার জেরেই।

জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের দাবি, আরও আগেই রাশ টানা উচিত ছিল প্রশাসনের। তা হলে এমন অন্ধ বিশ্বাস মানুষের মনে দানা বাঁধত না।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুন্দলপুর-হরিহরপাড়া রাজ্য সড়কে স্বরূপপুর বাজার এলাকায় পথ অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশ। ভিড় ক্রমেই বাড়তে থাকে। তাঁদের দাবি, পুলিশ-প্রশাসন ও চিকিৎসকদের যোগসাজসে আমজাদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। এ দিন তারই রোষ গিয়ে পড়ে পুলিশ ও প্রশাসনের উপরে। এলাকায় গেলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের উপরেও চড়াও হন অবরোধকারীরা।

তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলতে গেলেই পুলিশের উপরে শুরু হয় ইট বৃষ্টি। জনতার তাড়ায় এক সময়ে পিছু হটতে থাকে পুলিশ। সেই সময় মুড়ি মুড়কির মতো ইট পড়তে থাকে। আহত হন পুলিশকর্মীরা। গুরুতর আহত হয়েছেন হরিহরপাড়ার ওসি। তিনি বহরমপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ইটের ঘায়ে আহত হয়েছেন দশ জন পুলিশকর্মী। দু’টি পুলিশের গাড়িতেও হামলা চালান তাঁরা। পরে ওই রাজ্যসড়কে গাছের গুঁড়ি, বাঁশ ফেলে প্রায় ঘণ্টা চারেক রাস্তা রুখে রাখেন অবরোধকারীরা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অনীশ সরকারের নেতৃত্বে স্বরূপপুর গ্রামে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। এর পরেই পিছু হটতে থাকেন রাস্তা রুখে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় শ’তিনেক গ্রামবাসী। পরে ওই গ্রামে ঢুকে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ইট-কাচের টুকরো, এমনকি বোমাও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Superstitions Clash Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE