সুস্মিতা খুনের প্রতিবাদে মোম মিছিল। —নিজস্ব চিত্র
ছোট্ট বোনকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বছর ছয়েকের মেয়েটি। বোনকে অক্ষত শরীরে পাওয়া গেলেও শনিবার দিনভর দিদির খোঁজ মেলেনি। রবিবার সকালে এলাকার একটি পুকুরের পাশে বস্তাবন্দি অবস্থায় সুস্মিতা দাসের (৬) ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে। তবে তার কানের সোনার দুল দু’টি মেলেনি।
ঘটনার দু’দিন পরেও পুলিশ দুষ্কৃতীদের নাগাল না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার সকালে তাঁরা কান্দি থানায় বিক্ষোভ দেখান। সন্ধ্যায় কান্দি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে পথ অবরোধও চলে। ওই অবরোধে সুস্মিতার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি সামিল হন কংগ্রেস ও তৃণমূলের নেতারাও।
ছোট্ট দু’টি সোনার দুল। দাম বড়জোর চার হাজার টাকা। আর সেই দুলের লোভেই সুস্মিতাকে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে নিহতের পরিবার। ঘটনার পরে পুলিশ এলাকারই এক দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে শ্বাসনালি কেটে সুস্মিতাকে খুন করা হয়েছে। হাতে ও পেটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, সোনার দুলের জন্যই এই খুন। তবে এর পিছনে আরও অন্য কোনও কারণ আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় দিঘিরপাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ত সুস্মিতা। শনিবার সকালে তার এক বছরের বোনকে নিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিল। তার পর সেই বাড়িতে বোনকে রেখে সে বেপাত্তা হয়ে যায়। ছোট মেয়েকে ফিরে পেলেও শনিবার বিকেল পর্যন্ত সুস্মিতার কোনও খোঁজ মেলেনি।
সুস্মিতার বাবা, পেশায় রাজমিস্ত্রি সীমন্ত দাস বলেন, ‘‘মাস ছয়েক আগে সোনার দুল দু’টো তৈরি করে দিয়েছিলাম। সেটা সব সময় ওর কানেই থাকত। এ দিন মেয়ের দেহ পাওয়ার পরে দেখি দুল দু’টো নেই। সামান্য এই দুলের জন্য মেয়েটাকে ওরা মেরেই ফেলল!’’ কান্দির বিধায়ক কংগ্রেসের অপূর্ব সরকার ও স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের গৌতম রায়েরা সমস্বরে বলছেন, ‘‘পুলিশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে না পারলে আমরা এলাকার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করব।’’
আর পুলিশ কী বলছে?
জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও। তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘আমরা তো দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। না পেলে কী করব?’’
সত্যিই তো, পুলিশের আর কী-ই বা করার আছে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy