E-Paper

আমোদ হত্যায় চায়ের দোকানের মালিক ধৃত

শুক্রবার সকালে ভরা বাজারে ধাওয়া করে গুলি করে খুন করা হয় আমোদ আলি বিশ্বাসকে। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এই খুন বলে পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের দাবি।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৪৭
A photograph of the tea shop

শনিবার বন্ধ খালেক মণ্ডলের চায়ের দোকান। নিজস্ব চিত্র।

পানটা হাতেই ধরা ছিল। খেতে পারেননি। তার আগেই হাঁসখালির তৃণমূল নেতা আমোদ আলি বিশ্বাসের(৫০) হাত ফুঁড়ে ঢুকেছিল বুলেট। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা সেই পান উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার যে দিন ঘটেছে অর্থাৎ শুক্রবার রাতেই এই খুনের চক্রান্তে জড়িত সন্দেহে স্থানীয় চা-পানের দোকানের মালিক খালেক মণ্ডলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে ভরা বাজারে ধাওয়া করে গুলি করে খুন করা হয় আমোদ আলি বিশ্বাসকে। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এই খুন বলে পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের দাবি। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সিবিআই তদন্ত দাবি করছেন। তৃণমূলের রামনগর-বড় চুপরিয়া ১ অঞ্চল কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন আমোদ। সম্প্রতি অঞ্চল সভাপতি পরিবর্তন হলেও নতুন কমিটি গঠিত হয়নি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে তাঁর সঙ্গে দলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্য গিয়াসউদ্দিন বিশ্বাসের রেষারেষি চলছিল।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০১৯ সাল থেকে আমোদের ভয়ে গ্রাম ছাড়া গিয়াসউদ্দিন। অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামে ঢুকতে মরিয়া গিয়াসউদ্দিনই এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অন্য দিনের মতো এ দিন সকালে বাড়ির কাছে বড় চুপরিয়া বাজারে চা খেতে গিয়েছিলেন আমোদ। চা খাওয়ার সময়ে তিনটি মোটরবাইকে চেপে পাঁচ জন এসে খুব কাছ থেকে গুলি চালায়।

এই ঘটনায় ধৃত খালেকের বাড়ি বড়চুপরিয়া গ্রামে। খুনের মূল অভিযুক্ত স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের গিয়াসউদ্দিন বিশ্বাসের বাড়ির পাশেই সে থাকে। তার দোকানে বসে চা খাওয়ার সময়েই হামলাকারীরা গুলি চালায় আমোদকে লক্ষ্য করে। শনিবার খালেদকে রানাঘাট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রথম থেকেই আমোদের পরিবারের লোকজন পুলিশের উপরে অনাস্থা প্রকাশ করে সিবিআই তদন্তের দাবি করছেন। এই বিষয়ে তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ওঁরা চাইতেই পারেন। তবে আমাদের পুলিশের উপরে ভরসা আছে। আমরা বিশ্বাস করি, পুলিশই প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করবে এবং করে আসল অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে।”

আমোদের পরিবারের অভিযোগ, খালেক খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত। আততায়ীরা রাস্তার ও পারে ভিড়ের ভিতরে দাঁড়িয়ে ছিল। খালেকই তাদের আমোদের চা খেতে আসার বিষয়ে জানায়। যদিও এই দাবি মানতে নারাজ খালেকের পরিবারের লোকজন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, খালেক আগে ভিন দেশে কাজ করত। কিডনির সমস্যা ধরা পড়ায় সে দেশে ফিরে আসে। বছর চারের আগে তার একটা কিডনি বাদ দিতে হয়েছে, অন্যটির অবস্থাও খুবই খারাপ। সংসার চালাতে সে মাস চারেক আগে বড় চুপরিয়া বাজারে চায়ের দোকান খুলে বসে।

শুক্রবার রাতে নিহত আমোদের মেয়ে সিরিনা বিবি আট জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই তালিকায় খালেক মণ্ডলও রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে রামনগর-বড়চুপরিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য গিয়াসউদ্দিন বিশ্বাস ও তার দুই ছেলে সাহিন ও সেলিম। গিয়াসউদ্দিন ও আমোদের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘ দিনের। এর আগেও সে দু’বার আমোদের উপর হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Murder arrest Tea shop Hanshkhali

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy