Advertisement
E-Paper

বিয়ে থমকানোয় বুকের পাথর সরল কিশোরীর

বিয়ে প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল মেয়েটির। নারাজ কিশোরী তাই চুপি চুপি স্কুলের শিক্ষকদের জানিয়েছিল— ‘স্যার আমাকে বাঁচান, পড়তে চাই, বিয়ে নয়!’

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩১
বাড়ি থেকে উদ্ধারের পরে। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ি থেকে উদ্ধারের পরে। —নিজস্ব চিত্র।

বিয়ে প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল মেয়েটির। নারাজ কিশোরী তাই চুপি চুপি স্কুলের শিক্ষকদের জানিয়েছিল— ‘স্যার আমাকে বাঁচান, পড়তে চাই, বিয়ে নয়!’

পুলিশ-প্রশাসন নিয়ে গিয়ে দিন কয়েক আগে সে বিয়ে কোনওরকমে ঠেকিয়ে ছিলেন শিক্ষকেরা। তবে, তা যে নিতান্তই সাময়িক, জানত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ওই ছাত্রী। তাই, পুলিশ-পেয়াদা ফিরতেই ফের শুরু হয়েছিল তোড়জোড়।

এ বার তাই অনশন শুরু করেছে ওই ছাত্রী। আর নাগাড়ে অভূক্ত থাকায় শেষতক তাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে। বৃহস্পতিবার তাকে ভর্তি করানো হয়েছে গ্রামীণ হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শুধু না খেয়ে থাকার জন্য নয়, গত কয়েক দিন ধরে বিয়ে করার জন্য চাপ দিয়ে মেয়েটির উপরে চলেছে নানান নিযাতর্নও।

আরও পড়ুন: ঘরে হাতির শুঁড়, মেয়েকে ছুড়লেন বাবা

এ ক্ষেত্রেও হয়তো তাই হত।

২২ ফেব্রুয়ারি, মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু সামিমার। তবে, সে সবে আমল দেয় কে! ৯ ফেব্রুয়ারি তাই বিয়ে পাকা করে ফেলেছিলেন সামিমার বাবা-মা। জানতে পেরে, স্কুলের শিক্ষকেরা পুলিশ- আর যুগ্ম বিডিও-কে নিয়ে সটান হাজির হয়েছিলেন মালোপাড়ায়। প্রধান শিক্ষক প্রভাসচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে এস‌ে আমায় বলল, বিয়ে পাকা হয়ে গিয়েছে স্যার, কিন্তু ওর একেবারেই মত নেই। বাবা, মা’কে অনেক বুঝিয়েও রাজি করানো যাচ্ছে না দেখে পুলিশে খবর দিই।’’

পুলিশের ধমকে সামিমার বাবা আবেসুদ্দিন মণ্ডল মুচলেকা দিয়ে আসে বটে তবে তা যে নিছকই লোক দেখানো, মালুম হয়েছিল দিন কয়েকের মধ্যেই। পুলিশ ফিরতেই, চুপি সারে ফের শুরু হয়েছিল তোড়জোড়। তবে, এ বার নিজেই লড়াইটা শুরু করেছিল সামিমা।

আরও পড়ুন: কয়েক কোটি তছরুপে অভিযুক্ত আরাবুল

এ বার আর দেরি করেননি প্রভাসবাবু। স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার গ্রামে গিয়ে হাজির হন তিনি। জানানো হয়, বিয়ে বন্ধ করা না হলে নাবালিকা বিয়ের দায়ে বাপ-মা’র ঠিকানা হবে জেলখানা। আবেসুদ্দিন মিনমিন করে একটা যুক্তি খাড়া করার চেষ্টা করেছিলেন বটে— ‘‘পাত্র চাপ দিচ্ছিল বলে আমরা আর বিয়ে পিছিয়ে দিতে চাইছিলাম না। তার উপর, বিনা পনে বিয়ে।’’ তবে, আপাতত সে লোভে দাঁড়ি টানতেই হচ্ছে তাঁকে!

আর, বিয়ে থমকে যাওয়ায় খুশি ধরছে না সামিমার।

বলছে, ‘‘কী ভাল যে লাগছে, মনে হচ্ছে বুক থেকে পাথর নেমে গেল!’’

Teenage Girl Marriage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy