Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Abhishek Banerjee

রানাঘাটে অভিষেকের সভায় লক্ষ্য দেড় লাখ মানুষের জমায়েত! মতুয়া মন ছুঁতে নীলনকশায় কী কী

২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে রাজ্যে ঘাসফুলের মেলা দেখা গেলেও রানাঘাট সংসদীয় ক্ষেত্রে ভরাডুবি হয় তৃণমূলের। তার পর এই প্রথম এত বড় মাপের সভা করতে চলেছে তারা।

অভিষেকের সভা ঘিরে চূড়ান্ত প্রস্তুতি রানাঘাটের তৃণমূল নেতৃত্বের। কী কী লক্ষ্য থাকছে?

অভিষেকের সভা ঘিরে চূড়ান্ত প্রস্তুতি রানাঘাটের তৃণমূল নেতৃত্বের। কী কী লক্ষ্য থাকছে? —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ ২১:৪২
Share: Save:

সামনে পঞ্চায়েত ভোট। এ বার নদিয়ার রানাঘাটের ‘মিলন মন্দির’ মাঠে জনসভা করতে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার দুপুর ২টোয় অভিষেকের সভা রয়েছে। শুক্রবার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে দলীয় এবং প্রশাসনিক স্তরে। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ছাড়াও জেলা স্তরের একাধিক শীর্ষ নেতাকে দেখা গেল ব্যস্ত পায়ে সভামঞ্চ এবং মাঠের প্রস্তুতি তদারকি করতে। রানাঘাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কে কান্নান একাধিক বার সভাস্থল পরিদর্শন করেছেন। খতিয়ে দেখেছেন নিরাপত্তার বিষয়টি।

বিভিন্ন কারণে অভিষেকের শনিবারের সভা গুরুত্বপূর্ণ। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে রাজ্যে ঘাসফুলের মেলা দেখা গেলেও রানাঘাট সংসদীয় ক্ষেত্রে ভরাডুবি হয় তৃণমূলের। তার পর এই প্রথম এত বড় মাপের সভা করতে চলেছে তারা। সভাকে সফল করতে মরিয়া ঘাসফুল নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতারা জানাচ্ছেন, অভিষেকের সভায় অন্তত দেড় লক্ষ মানুষের ভিড় টানা তাঁদের লক্ষ্য।রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার ৯ টি বিধানসভা কেন্দ্রের ২১ টি ব্লক ও ১০ টাউন কমিটির প্রত্যেকটিতে জনতার জমায়েত সুনিশ্চিত করার ব্যাপারে বৈঠক করে ফেলেছে তৃণমূল। সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত তৃণমূলের দুই জয়ী বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহা (নবদ্বীপ) এবং ব্রজকিশোর গোস্বামী (শান্তিপুর)কে জমায়েতের বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।

তবে এর মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দলের ব্যাপারেও ওয়াকিবহাল তৃণমূল নেতৃত্ব। কিছুটা অস্বস্তি ঢেকে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘জেলায় তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠী নেই। সবাই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার প্রস্তুতিতে অংশ নিচ্ছি। আশা করি, শনিবারের সভায় রেকর্ড জমায়েত হবে।’’

অন্য দিকে, মতুয়া অধ্যুষিত রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির সাংগঠনিক ভিত তুলনামুলক মজবুত। গত লোকসভা এবং বিধানসভার ভোটের নিরিখে এই তত্ত্বে সিলমোহর পড়েছে। এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত নদিয়ায় সভা করে গেরুয়া শিবিরে চিড় ধরানোয় মূল লক্ষ্য অভিষেকের।

পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে শুভেন্দু অধিকারীরা যখন সিএএ ইস্যুতে শান দিচ্ছেন, তখন পাল্টা এ ব্যাপারে মুখ খুলতে পারেন অভিষেক। নাগরিকত্ব ইস্যুতে মতুয়া সম্প্রদায়ের মন পেতে বেশ কিছু ঘোষণাও করতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এমনটাই বলছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

রানাঘাট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অভিষেকের জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সভামঞ্চ থেকে সমাবেশ পর্যন্ত ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রস্তুত। মঞ্চে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন অভিষেকের জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তায় থাকা আধিকারিকেরা। তার পরের স্তর অর্থাৎ সভামঞ্চের সামনে থাকবে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল অফিসাররা। সব শেষে থাকছে রানাঘাট জেলা পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী। অভিষেকের সভায় নিরাপত্তা আধিকারিক, পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ার মিলিয়ে প্রায় ১,৬০০ নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন থাকছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। থাকছেন আইপিএস পদমর্যাদার ৬, ইনস্পেক্টর পদমর্যদার ৪০, সাব ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার ১২০, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদায় ২১২ জন এবং প্রায় ৭০০ রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল দিয়ে তৈরি হবে নিরাপত্তা বেষ্টনী।

জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস ও ট্রেনে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা এসে পৌঁছবেন সভাস্থলে। তার মধ্যে রানাঘাট শহরের যান চলাচল ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা ট্র্যাফিক গার্ড। সমাবেশের বাড়তি ভিড় সামলে রানাঘাটকে সচল রাখাই তাদের চ্যালেঞ্জ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE