Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
TMC

Illegal gratification case: টাকা নিয়ে বিধায়ককেই দিয়েছেন, মুখোমুখি জেরায় বলেছেন প্রবীর, দাবি এক প্রতারিতের

সম্প্রতি তাপসের আপ্ত সহায়ক প্রবীল কয়াল-সহ তিন জনকে দুর্নীতি দমন শাখা দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার করে।

তাপস সাহা এবং প্রবীর কয়াল।

তাপস সাহা এবং প্রবীর কয়াল। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তেহট্ট শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২২ ০১:৩৫
Share: Save:

আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তিনি আগেই করেছিলেন। এ বার সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতায় দুর্নীতি দমন শাখার অফিসে ডেকে পাঠানো হল নদিয়ার নাজিরপুরের বাঘাডোবা এলাকার বাসিন্দা অলোক সাহাকে। মঙ্গলবারই তিনি তদন্তকারীদের মুখোমুখি হন। অলোকের দাবি, তাঁকে তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, সেই সময়ে প্রবীর টাকা নেওয়ার কথা তদন্তকারীদের সামনে স্বীকার করে নিয়েছেন। এমনকি, সব টাকা প্রবীর বিধায়ককেই দিয়েছেন বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন। এমনটাই দাবি অলোকের।

তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা এর আগে পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে, তিনি এলাকার একাধিক মানুষকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন। চাকরি না পাওয়ায় সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে প্রতারিতদের একাংশ অভিযোগ জানায়। অনেকে দুর্নীতি দমন শাখায় ইমেল করেও অভিযোগ জানিয়েছেন। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন থানাতেও অভিযোগ জমা পড়ে। ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি তাপসের আপ্ত সহায়ক প্রবীল কয়াল-সহ তিন জনকে দুর্নীতি দমন শাখা দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে গ্রেফতার করে। তাপস যদিও দাবি করেন ধৃত প্রবীর তাঁর আপ্ত সহায়ক ছিলেন না।

মঙ্গলবার অভিযোগকারীদের অনেককেই কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয় দুর্নীতি দমন শাখার পক্ষে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে অলোকও এসেছিলেন। তাঁর দাবি, তিনি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবার খুবই দরিদ্র। তাঁর বাবা সেলাইয়ের কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালাতেন। সম্বল বলতে নাজিরপুর বাজারে একটা ছোট্ট দোকান। অলোকের অভিযোগ, তাঁর বাবা পতিতপাবন সাহাকে স্থানীয় বিধায়ক তাপস কথা দিয়েছিলেন ছেলের চাকরি করে দেবেন। এ জন্য পাঁচ লক্ষ টাকাও চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তদন্তকারীদের কাছে অলোক অভিযোগ করেছেন, পাঁচ লক্ষ না দিতে পারলেও ওই ছোট্ট দোকান বিক্রি করে তাঁর বাবা বিধায়কের হাতে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, এ সব ঘটেছে প্রায় আড়াই বছর আগে। পতিতপাবন প্রয়াত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তাঁর ছেলে।

অলোক মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দুর্নীতি দমন শাখার দফতরে পৌঁছন। তাঁর দাবি, তদন্তকারীরা বয়ান রেকর্ড করেছেন। আলাদা ভাবে তো বটেই, প্রবীরের মুখোমুখি বসিয়েও অনেক ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। অলোকের দাবি অনুযায়ী, সেই সময় প্রবীর তদন্তকারীদের জানান, তিনি সাহা পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। অলোক বলেন, ‘‘প্রবীর স্বীকার করেছেন যে তিনি টাকা নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি বলেন, ‘টাকা যা নিয়েছি, সবই বিধায়ককে দিয়েছি।’ এর পর আমার আর কী বলার থাকতে পারে!’’

অলোক এখন গৃহশিক্ষকতা করেন। তাঁর বৃদ্ধা মায়ের শরীরও ভাল নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। দুর্নীতি দমন শাখার অফিসের ন’তলা থেকে নেমে আসার সময় তাঁর সঙ্গে ছ’তলায় অনেকের সঙ্গেই দেখা হয়েছে বলে দাবি অলোকের। যাঁদের দুর্নীতি দমন শখার পক্ষে বয়ান রেকর্ডের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে।

তাপসের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE