Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পোশাক মেলেনি পড়ুয়াদের, নালিশ

পড়ুয়াদের পোশাকের জন্য বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কালীগঞ্জের হাটগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ নৈমুদ্দিনের বিরুদ্ধে শ’খানেক ব্যক্তির স্বাক্ষর সম্বলিত একটি অভিযোগপত্র জমা পড়েছে স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালীগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০০:১৬
Share: Save:

পড়ুয়াদের পোশাকের জন্য বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কালীগঞ্জের হাটগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ নৈমুদ্দিনের বিরুদ্ধে শ’খানেক ব্যক্তির স্বাক্ষর সম্বলিত একটি অভিযোগপত্র জমা পড়েছে স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এ ছাড়াও অভিযোগের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে কালীগঞ্জের ওসি, বিডিও, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) ও নদিয়ার জেলা শাসক পি বি সালিমকে। ওই প্রধান শিক্ষক একবার মুচলেকা দিয়ে ভুল স্বীকার করলেও পরে তিনি জানান যে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন।

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতার আগে তৈরি ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৯০ জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা নয় জন। গত ২০ জুন বিদ্যালয়ের ২৫১ জন পড়ুয়ার পোশাক বাবদ স্কুলের অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ ৪০০ টাকা জমা পড়ে। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক নৈমুদ্দিন ওই সম্পূর্ণ টাকা দু’দফায় অর্থাৎ গত মাসের ৩০ ও চলতি মাসের ৭ তারিখে তুলে নেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই টাকা না পড়ুয়াদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে না স্কুল কর্তৃপক্ষ পোশাক তৈরি করেও পড়ুয়াদের মধ্যে বণ্টন করেছেন।

অথচ প্রধান শিক্ষক ৮ জুলাই সমস্ত টাকা খরচ হয়েছে এই মর্মে স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ পেশ করেছেন। সেখানে ‘পোশাক পেয়েছি’-এই মর্মে ২৫১ জন পড়ুয়ার স্বাক্ষরও রয়েছে। এই ঘটনার পর থেকেই গোটা গ্রাম জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। গ্রামের সিংহভাগ অভিভাবকরাই জানাচ্ছেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা পোশাক পায়নি। পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাদের জোর করে ওই শংসাপত্রে সই করতে বলা হয়েছিল।

গত শনিবার এ ব্যাপারে গ্রামের লোকজন প্রধান শিক্ষককে ঘিরে ধরেন। চাপের মুখে প্রধান শিক্ষক নিজের ‘কীর্তি’র কথা স্বীকার করেন। এমনকী তিনি পড়ুয়াদের পোশাকের টাকা সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করেছেন- এই মর্মে একটি লিখিত স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন। যদিও ওই দিন সন্ধ্যাতেই মহম্মদ নৈমুদ্দিন বলেন, ‘‘আমি চাপে পড়ে মুচলেকা দিয়েছি। আসলে আমি পড়ুয়াদের পোশাকের জন্য দর্জি লাগিয়েছি। সকলেই পোশাক পাবে। আমি টাকা আত্মসাৎ করিনি।’’

প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘পোশাক তৈরি হচ্ছিল তাই দিয়েছিলাম।’’ কিন্তু জেলার একাধিক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক জানাচ্ছেন, পোশাক পড়ুয়াদের হাতে না পড়া অবধি পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক টাকা খরচ হয়েছে-এই মর্মে কোনও শংসাপত্র দিতে পারেন না।

ওই স্কুলে পরিচালন সমিতি ভেঙে গিয়েছে। প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন প্রধান শিক্ষক স্বয়ং। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা গ্রামবাসীদের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক তাঁদের অন্ধকারে রেখেই লক্ষাধিক টাকার এই দুর্নীতি করেছেন।

স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক স্বাগতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘তদন্তে প্রধান শিক্ষকের কোনও গাফিলতি ধরা পড়লে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hatgacha village mismanagement in schools kaliganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE