প্রতি দিনের ব্যবহারের জন্য জলের জোগানটুকু নেই এলাকায়। কারণ, এলাকায় সরকারি উদ্যোগে জল সরবরাহ পরিষেবা নেই এখনও। প্রতিবেশী দেশ ভুটান থেকে মাটির তলা দিয়ে পাইপ মারফত জল এসে পৌঁছয়। পান করা থেকে শুরু করে নিত্যকর্ম সারতে সেই জলই এক মাত্র ভরসা পাসাখা সীমান্ত ঘেঁষা জয়গাঁর খোকলাবস্তির বাসিন্দাদের। মাঝেমধ্য়েই ফেটে যায় সেই পাইপ। তখন দীর্ঘ সময়ে জল মেলে না এলাকায়। বছরের বাকি সময় যেমন-তেমন করে কাটলেও প্রখর গ্রীষ্মে জলের চাহিদা মেটানো নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় সীমান্তের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কখনও মাটির তলায় জলের পাইপ নষ্ট হয়ে গেলে ভুটান থেকে জলের পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যায়। তখন ভুটান প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সে দেশি গিয়ে মেরামত করতে হয় সেই পাইপলাইন। যা পরিশ্রম সাপেক্ষ তো বটেই, ব্যয়বহুলও। বর্ষার মরসুমে বৃষ্টির জল পাত্রে ধরে রেখে ব্যবহার করতে বাধ্য হন বাসিন্দারা। যে কারণে বাড়ে ডেঙ্গি-সহ অন্য মশাবাহিত রোগের আশঙ্কাও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাসাখা সীমান্তের বাঙ্গেবাজার সংলগ্ন জয়গাঁর এই খোকলাবস্তি এলাকায় জল-সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও প্রশাসনের তরফে কখনওই সুরাহার চেষ্টা করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা ঋতু তামাং বলেন, ‘‘সরকারি জলের পরিষেবা না থাকায় চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। গরমে তা আরও বাড়ে। মাঝেমধ্যেই ভুটান থেকে আসা জলের পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় অনেকটা দূরে হেঁটে গিয়ে পাহাড়ি গ্রাম থেকে জলসংগ্রহ করে নিয়ে আসতে হয় আমাদের।’’ আর এক বাসিন্দা গঙ্গা তামাংয়ের ক্ষোভ, ‘‘এলাকার ৩০টি পরিবার বছরের পর বছর ধরে ভুগছে। কবে আমাদের এই ভোগান্তি দূর হবে?’’
প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি কালচিনির পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি সাধো লোহার। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার কাছে কখনও কোনও অভিযোগ আসেনি। আমরা এলাকা পরিদর্শনে যাবো। সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এলাকার বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামা বলেছেন, ‘‘দুর্নীতি করে যদি সময় মেলে তবেই তো সাধারণ মানুষের কথা ভাববেন ওঁরা। এ নিয়ে বিধানসভায় সরব হবো আমি।’’
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বাস্তুকার গোলাম মাশরাফি মুর্তজা বলেন, ‘‘খোকলাবস্তি এলাকায় দু’টি সরকারি জল প্রকল্পের কাজ শেষের পথে রয়েছে। ২০২৪ সালের গোড়ার দিকে এই কাজ শুরু হয়েছে। তা শেষ হলেই জল পেতে আর কোনও সমস্যা হবে না।’’ সূত্রের খবর, এর আগেও প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। তবে তা সফল হয়নি। দাবি, সমতল থেকে এই জায়গার উচ্চতা বেশি হওয়ায় জলের স্তর মিলছিল না। ফলে দু’বার বোরিং হওয়ার পরেও কাজ থমকে যায়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)