সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।
‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করায় আগামী দিনে বাংলা থেকে নির্মূল হবে তৃণমূল। একই অবস্থা হবে সিপিএম এবং কংগ্রেসের। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ক্ষমতায় আসা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা’’— বৃহস্পতিবার গাজলে মতুয়া মহাসঙ্ঘের মালদহ জেলা কমিটির ডাকে এক সমাবেশে এমনই কথা বললেন সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুর।
শান্তনুর মন্তব্য নিয়ে গাজলের তৃণমূল বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমি নিজেও মতুয়া। আমাকে নির্বাচিত করার পিছনে মতুয়াদের অবদান অপরিসীম। মতুয়ারা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। তাই তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এটা মতুয়াদের সভা নয়, বিজেপির সভা। মতুয়াদের ভুল বুঝিয়ে এখানে ডেকে আনা হয়েছে।’’
মালদহ জেলার গাজল, বামনগোলা, হবিবপুর ও পুরাতন মালদহে মতুয়া সম্প্রদায়ের বসবাস। মতুয়াদের সেই ‘ভোট ব্যাঙ্ক’ পালে টানতে সচেষ্ট সব দলই। হিসেব অনুযায়ী, গত লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া প্রভাবিত এলাকায় বিজেপি ভাল ফল করে। তবে হারানো জমি ফেরাতে সিএএ ও এনআরসি-কে ‘অস্ত্র’ করে ময়দানে নামে তৃণমূল।
বিজেপির অন্দরমহলের খবর, এই পরিস্থিতিতে মতুয়াদের ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখার তাগিদেই ময়দানে নামতে হয়েছে। নতুন নাগরিকত্ব আইনে মতুয়া তথা উদ্বাস্তুদের যে লাভ হবে তা বোঝানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে এ দিন গাজল বিএসএ ময়দানে হয় সংগঠনের মহাসম্মেলন। সঙ্ঘ সূত্রে খবর, সেখানে ছিলেন সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, মতুয়া মহাসঙ্ঘের উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক রঞ্জিত সরকার, সাধারণ সম্পাদক সুমেন্দ্রনাথ গাইন, মতুয়া সেনার সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু বিশ্বাস।
‘‘সিএএ আমাদের অধিকার, এনআরসি আমাদের সুরক্ষা’’— এমনই ব্যানার হাতে গাজলের কদুবাড়ি মোড় থেকে ঢাক, কাঁসর, ঘন্টা নিয়ে শুরু হয় মতুয়াদের মিছিল। গাজল শহর ঘুরে মিছিল পৌঁছয় বিএসএ ময়দানে। সেখানে শান্তনু বলেন, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে আমরা প্রচার চালাচ্ছি। এ দেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে প্রথমে উদ্যোগী হয়েছিল মতুয়া মহাসঙ্ঘই। সঙ্ঘের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এমন পদক্ষেপ করেছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাস না হলে আগামী দিনে যে কোনও কেন্দ্রীয় সরকার মতুয়া এবং উদ্বাস্তুদের রোহিঙ্গাদের মতো দেশ থেকে বের করে দিতে পারত।’’
শান্তনুর অভিযোগ, তৃণমূল-সহ বিরোধীরা এনআরসি ও নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। তাঁর দাবি, ওই নতুন আইনের প্রভাব ভোট বাক্সে অবশ্যই পড়বে এবং তা বিজেপির অনুকূলেই।
দিপালী অবশ্য তা মানতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy