সেবক-রংপো রেল প্রকল্প। নিজস্ব চিত্র।
চিনের ‘আগ্রাসী মনোভাবের’ প্রেক্ষিতে, ২০২৪ সালেই চিন সীমান্তবর্তী সিকিমকে রেলপথে জুড়ে ফেলার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ করোনার জন্য এক বার, শ্রমিক সমস্যায় পরে দু’বার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি৷ গত অক্টোবরে সিকিমে তিস্তায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য কাজ নতুন করে ব্যাহত হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই সময়ে কাজ শেষ করার লক্ষ্য ঠিক হয়েছে। তবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তা হবে কি না, তা নিয়ে এখনও চিন্তায় রেলের আধিকারিকেরা।
কয়েক বছর আগে, সিকিমের সীমান্তে চিনের ‘চোখরাঙানি’ দেখে সেবক-রংপো রেল প্রকল্পের কাজে দ্রুতি আনার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সাধারণ সিকিমবাসীর জন্য প্রথম রেলপথ, তবে সেনা বাহিনীর জন্য তা অন্যতম ‘লাইফ লাইন’ হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু এ বছরই যাতে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়, তার দিকে দিল্লির নির্দেশে বিশেষ নজর দিচ্ছে রেল। কারণ, চিন নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন’ দিল্লি। একাধিক বার লক্ষ্যে বিফল হওয়ায় এ বার রয়েছে বাড়তি সতর্কতার নির্দেশ। গত ২০০৮-০৯ সালে প্রকল্পের খরচ প্রায় ১,৩০০ কোটি ছিল। এখন বেড়ে প্রকল্পের খরচ সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যদিও রেলের আধিকারিকদের দাবি, এ বছরই কাজ শেষ হবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত ভাবে প্রকল্পের খোঁজ নিচ্ছি। যাতে দ্রুত কাজ শেষ করা যায়, সে দিকে নজর রয়েছে।’’ রেল সূত্রের খবর, সেবক-রংপো প্রকল্পেও বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্রীয় নজরদারি। নির্মাণকারী সংস্থার কাছে নিয়মিত রিপোর্ট নিচ্ছে রেল।
একাধিক বার সুড়ঙ্গ ধসে শ্রমিকের মৃত্যু, জল ঢুকে কাজ বন্ধের মতো একাধিক ঘটনায় সময়সীমা ধরে রাখতে পারেনি নির্মাণকারী সংস্থা। শেষ বার সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে, রাস্তাঘাট পুরোপুরি নষ্ট হয়েছিল। অন্তত এক মাস কাজ বন্ধ ছিল প্রকল্পটির। কিন্তু এই সব পেরিয়ে কি চলতি বছরের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে? রেল নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার কার্যনির্বাহী বাস্তুকার মাহিন্দার সিংহ বলেন, ‘‘আমরা চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করব।’’
তবে দুর্গম এলাকায় নির্মাণ কাজে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয় বলে রেল সূত্রে দাবি। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত কেবল নয়, রংপো থেকে গ্যাংটক এবং গ্যাংটক থেকে নাথু লা পর্যন্ত লাইন বিছানোর জন্য আরও দু’টি সমীক্ষা এর মধ্যেই শুরু করেছে রেল। যদিও সেগুলি কবে শেষ হবে, তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় বলেই রেল আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের রাস্তা একটাই, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। বর্ষায় তা অনেক সময়ই বন্ধ হয়। এ বার শীতে সিকিম বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। তাই এই রেলপথ। বিশেষ করে, সেনা গতিবিধির সুবিধার্থে কাজে আসবে প্রকল্পটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy