মালদহে সরকারি প্রকল্পে রাস্তা তৈরির কাজ নিয়ে তুমুল বিতর্ক। — নিজস্ব চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের পথশ্রী প্রকল্পের বোর্ড রয়েছে। তাতে জ্বলজ্বল করছে প্রকল্প শুরু এবং শেষের তারিখ। খরচের বিবরণও রয়েছে তাতে। কিন্তু যে প্রকল্পের জন্য এত কিছু, সেই রাস্তাটিই বাস্তবের মুখ দেখেনি। অথচ সেই রাস্তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও ধুমধাম করে সেরে ফেলা হয়েছিল। মালদহের মানিকচকে রাজ্য সরকারের পথশ্রী প্রকল্পের অন্তর্গত একটি রাস্তা নিয়ে দুর্ভোগের শেষ নেই স্থানীয়দের।
মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত পাল্লুরোড থেকে ইজাজুল হকের বাড়ি পর্যন্ত ১.০২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা তৈরির বরাত পেয়েছিল একটি ঠিকাদারি সংস্থা। সরকারি বোর্ডে লেখা রয়েছে, প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ, কাজ শেষ হয় ২৫ এপ্রিল। এ জন্য খরচ হয় ৪৭ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৬২ টাকা। প্রসঙ্গত, গত ২৪ মার্চই প্রকল্পের আগাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও সেরে ফেলা হয়। স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূলের নেত্রী সাবিত্রী মিত্রের উপস্থিতিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মানিকচকের বিডিও-সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্তারা। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অনুষ্ঠানের পর থেকেই আর দেখা মেলেনি ঠিকাদারের। স্বভাবতই কাজ হয়নি কিছুই। অথচ সরকারি বোর্ডে জ্বলজ্বল করছে কাজ শেষের তারিখও! এটা কী করে সম্ভব? প্রশ্ন গ্রামবাসীদের।
গ্রামবাসী মহম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, ‘‘মার্চ মাসে আমাদের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র এই রাস্তার উদ্বোধন করেছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমরাও এসেছিলাম। মানিকচক হাইস্কুলের পার্শ্ববর্তী পাল্লুরোড থেকে মানিকচক ঘাট রোডের সংযোগকারী এই রাস্তা নির্মাণ হবে বলে গ্রামবাসীরা খুব আনন্দিত ছিলেন। কিন্তু উদ্বোধনের এত দিন পেরিয়ে গেলেও শুধু মাত্র বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি জায়গায় বাঁশের খুঁটি দেওয়া ছাড়া কোনও কাজ হয়নি। এ বিষয়ে বার বার ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ হয়নি।’’
এ বিষয়ে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পিঙ্কি মণ্ডল জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তিনি বলেন, ‘‘বিডিও সাহেবের সঙ্গে কথা বলে দেখছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজগুলি করানোর চেষ্টা করব। আমি বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলব।’’ বিধায়ক সাবিত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে প্রশাসনকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথশ্রী প্রকল্প চালু করেছেন গ্রামের মানুষের সুবিধার জন্য। এমন কাজ হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। যদি কেউ এমনটা করে থাকেন এবং তা প্রমাণিত হয় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy