Advertisement
E-Paper

ধান জমির আল ধরে ছুট রোগীর

অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্সে বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কোনও নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা ছিল না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৩৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আচমকা দেখে কোনও সিনেমার শ্যুটিং মনে হতেই পারে।

চাঁদের আলোয় ধানখেতের আল ধরে প্রাণপণে ছুটছেন এক বৃদ্ধ। তাঁকে ধাওয়া করে চলেছে ১৫-১৬ জন পুলিশের একটি দল। ছুটেও ধরা যাচ্ছে না বৃদ্ধকে। ভয় দেখাতে শেষ পর্যন্ত এক পুলিশকর্মী “গুলি করে দেব” বলে চেঁচিয়ে উঠতেই রণে ভঙ্গ দেন বৃদ্ধ। হাঁফাতে হাঁফাতে আলের মধ্যেই বসে পড়লেন তিনি। চারদিক থেকে তাকে ঘিরে ধরলেন পুলিশকর্মীরা।

চলন্ত অ্যাম্বুল্যান্স থেকে পালানো বিচারাধীন বন্দি বৃদ্ধকে এ ভাবেই ধরে তপসিখাতার কোভিড হাসপাতালে পাঠালেন আলিপুরদুয়ারের পুলিশ কর্মীরা। শনিবার গভীর রাতে আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকে বাবুরহাটের কাছে আট মাইল এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ, বিচারাধীন বন্দি হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ কিংবা কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই ওই বৃদ্ধকে শুধুমাত্র চালকের উপর ভরসা করে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে সংশোধনাগার থেকে কোভিড হাসপাতালে পাঠান হয়। যা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

জেলা সংশোধনাগার সূত্রের খবর, একটি খুনের চেষ্টার মামলার অভিযুক্ত ফিরেন নার্জিনারি নামে ৬২ বছরের ওই ব্যক্তিকে শুক্রবার বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার পর বৃদ্ধের করোনা পরীক্ষা করা হলে সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। শনিবার সন্ধ্যায় এই খবর পাওয়ার পরই সংশোধনাগারের তরফে আলিপুরদুয়ার পুরসভার কন্ট্রোল রুমে তা জানানো হয়। এরপর পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স সংশোধনাগারে বৃদ্ধকে নিয়ে কোভিড হাসপাতালে রওনা হয়। কিন্তু অভিযোগ, অ্যাম্বুল্যান্সে বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কোনও নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা ছিল না।

অ্যাম্বুল্যান্স আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া বীরপাড়া চৌপথি পৌঁছতেই বৃদ্ধ প্রথমবার পালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এরপর তপসিখাতা হাটখোলার কাছে রাস্তার স্পিড-ব্রেকারে চালক অ্যাম্বুল্যান্সের গতি কম করতেই দরজা খুলে পালিয়ে যান বৃদ্ধ। খবর পেয়ে আলিপুরদুয়ার থানার বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে তন্নতন্ন করে বৃদ্ধকে খুঁজতে শুরু করে। প্রায় দু’ঘণ্টা পর পুলিশের কাছে খবর মেলে, আটমাইলের কাছে বৃদ্ধকে দেখা গিয়েছে। এরপর পুলিশ সেখানে পৌঁছতেই ধান খেতের আল ধরে ছুটতে শুরু করেন বৃদ্ধ।

কেন নিরাপত্তা ছাড়াই বৃদ্ধকে তপসিখাতায় পাঠানো হল? মহকুমাশাসক রাজেশ জানান, কন্ট্রোল রুমে ফোন আসার পরই পুরসভা থেকে সংশোধনাগারে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়। পুলিশের প্রয়োজন আছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের। সংশোধনাগার সুপার অনিরুদ্ধ গুপ্ত বলেন, “কোনও করোনা রোগীর সঙ্গে সুস্থ লোক থাকলে তারও আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে। সেজন্যই কেউ করোনা আক্রান্ত হলে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই তাকে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।” পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের ব্যবস্থা করা হত।”

Coronavirus in North Bengal Ambulance Under trialed suspect
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy