কোথাও ২৪ ঘণ্টায় ৪০হাজার, কোথাও হাফ সেঞ্চুরি। শহর থেকে গ্রাম, এমনই ছবি মালদহের নার্সিংহোমগুলিতে। সেই বিলই সপ্তাহের শেষে লাখের গন্ডি অতিক্রম করায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে সংক্রমিতদের পরিবারদের। তাঁদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যদফতরের নজরদারির অভাবে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো ‘ফি’ নিচ্ছে নার্সিংহোমগুলি। এমন কী, সরকারি নির্দেশের পরেও নার্সিংহোমগুলিতে প্রকাশ্যে চিকিৎসা খরচের প্যাকেজের বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয় না বলে অভিযোগ। যদিও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মালদহে ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ। মালদহ মেডিক্যালের পাশাপাশি একাধিক গ্রামীন হাসপাতালেও কোভিড বিভাগ চালু করে স্বাস্থ্য দফতর। সরকারির পাশাপাশি জেলার একাধিক নার্সিংহোমেও দ্বিতীয় ঢেউয়ে শুরু হয় করোনা চিকিৎসা। নার্সিংহোমে করোনার চিকিৎসার খরচ নিয়েই উঠছে ভুঁড়িভুঁড়ি অভিযোগ। অভিযোগ, কোথাও মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ফি নেওয়া হচ্ছে ৪০ হাজার টাকা। কোথাও আবার নেওয়া হচ্ছে ৫০ হাজার টাকাও। শুধু তাই নয়, রোগীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলে আই সি ইউতে দেওয়ার নামেও বাড়তি বিল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এ দিকে, নার্সিংহোমগুলিতে ঠিকমতো চিকিৎসাও হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন সংক্রমিতদের আত্মীয় পরিজনেরা। সম্প্রতি, সংক্রমিত হয়ে মারা যান গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক। তিনি প্রথমে ভর্তি ছিলেন পুরাতন মালদহের নারায়ণপুরের বাইপাস সংলগ্ন এক নার্সিংহোমে। চার দিন নার্সিংহোমে থাকার পরে ওই অধ্যাপককে ভর্তি করা হয় মালদহ মেডিক্যালে।
তাঁর ভাই বলেন, ‘‘লাখ লাখ টাকা বিল হলেও নার্সিংহোমে কোনও চিকিৎসা হচ্ছিল না। তাই শেষ মুহূর্তে বাধ্য হয়ে দাদাকে ভর্তি করেছিলাম সরকারি হাসপাতালে। যদিও শেষ পর্যন্ত দাদার মৃত্যু হয়।’’ নার্সিংহোমগুলিতে নজরদারি চালানো উচিত বলে দাবি করেন তিনি। ইংরেজবাজার শহরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘মকদমপুর এলাকার এক নার্সিংহোমে পাঁচ দিন আমার রোগী সংক্রমিত হয়ে ভর্তি ছিলেন। আড়াই লক্ষ টাকা বিল দিলেও রোগীকে বাঁচাতে পারেনি। করোনা চিকিৎসার নামে নার্সিংহোমগুলিতে চরম অনিয়ম হচ্ছে।’’ রোগীর আত্মীয়দের দাবি, নার্সিংহোমের ফি ছাড়াও রয়েছে ওষুধের বিল।
যদিও একাংশ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, একবার ভিজিট করলেই চিকিৎসকদের দিতে হয় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এছাড়া পিপিই কিটের দাম ১৬০০ টাকা। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও পিপিই পরতে হয়। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক(স্বাস্থ্য) বৈভব চৌধুরী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
নেওয়া হবে।’’