Advertisement
E-Paper

শয্যার অভাব, নেই প্রসূতিদের বসার জায়গাও

কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবহার করে শুরু হয়েছিল কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

সৌমিত্র কুন্ডু

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:১৮
Share
Save

রোগীর চাপ বাড়লেও সেই নিরিখে বাড়েনি শয্যা। ফলে কখনও এক শয্যায় দু’জন রোগী, কখনও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে রোগীকে। কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে শয্যার অভাবকে ঘিরে এমনই অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে আরও দু’শো শয্যা বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই ব্যাপারে প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী মার্চে রোগী কল্যাণ সমিতির পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা। তখন ওই প্রস্তাব রাখা হবে। আবার ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবনে গর্ভবতী মায়েদের শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাসে একদিন বিশেষ শিবির করে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। সেখানে বসার জায়গা না-থাকায় ঘণ্টার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে প্রসূতিদের।

কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবহার করে শুরু হয়েছিল কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ক্রমে নানা পরিষেবা বেড়েছে। রোগীর চাপও বেড়েছে। অভিযোগ, সেই তুলনায় শয্যা বাড়েনি। বেশ কয়েক বছর ধরে পাঁচশো শয্যা নিয়েই চলছে হাসপাতালটি। অথচ মাঝেমাঝে রোগীর সংখ্যা বেড়ে সাতশো বা তার বেশিও হয়ে যাচ্ছে।

টাকাগছের বাসিন্দা এক রোগীর আত্মীয় সুমিতা রায় বলেন, ‘‘আমার বৌমা ভর্তি রয়েছেন। জায়গার অভাবে এক শয্যায় দু’জন রোগী থাকছে। অসুবিধে তো হচ্ছেই।’’ আর এক রোগীর আত্মীয় শীতলকুচির বাসিন্দা দীপঙ্কর বর্মণ বলেন, ‘‘পরিষেবা মিলছে। কিন্তু অন্তর্বিভাগে নির্দিষ্ট ঘরে শয্যা মেলেনি। ওই ব্যবস্থা হলে ভাল হত।’’

কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি সৌরদীপ রায় বলেন, “গড়ে সাতশো রোগী ভর্তি থাকছেন। তাই শয্যা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। পরবর্তী রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে কতগুলি শয্যা বাড়ান যায় সেনিয়ে প্রস্তাব দেওয়া হবে।” কোচবিহারের ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘নাগরিক সমাজের কাছ থেকেও শয্যা বাড়ানোর আর্জি এসেছে। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ভাবনা আছে।’’

ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ১০০ শয্য়াবিশিষ্ট নতুন ভবনে গর্ভবতী মায়েদের শারীরিক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাসে এক দিন বিশেষ শিবির করে প্রসূতিদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। সেই শিবিরে চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি সামনে উঠে এল। কয়েক জন প্রসূতি ও তাঁদের পরিবারের লোকজন জানান, প্রসূতিদের বসার কোনও বন্দোবস্ত নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। তাতে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কয়েকটা চেয়ার থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ভিড় বেশি হওয়ায় ভবনের বাইরে পৌঁছে যায় লাইন। রোদ মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সেই লাইনে। কোনও রকম ছাউনির কিংবা বসার জায়গা নেই। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থাও।

বুধবার ময়নাগুড়ির ভোটপাট্টি এলাকার বাসিন্দা সাধনা মণ্ডল বলেন, ‘‘ভেতরে বসার জায়গা নেই, পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। এক দিকে চিকিৎসক দেখানোর লাইন, অন্য দিকে, টিকিট নেওয়ার লাইন। আমি একটি লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি আর আমার পুত্রবধূ আর একটি লাইনে দাঁড়িয়েছি।’’ পঙ্কজ রায় নামে আর এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘স্ত্রীকে নিয়ে এসেছি। ভেতরে বা বাইরে বসার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এই রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।’’

ময়নাগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সিতেশ বর বলেন, সবেমাত্র নতুন ভবনে কাজ শুরু হয়েছে। এখনও সঠিক ভাবে গুছিয়ে ওঠা হয়নি। আমরা শারীরিক পরীক্ষা দু’দিন ধরে করব। তাতে ভিড় অনেকটাই কম হবে। সেই সঙ্গে আগামীতে বসার জায়গা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cooch Behar

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}