ফের বেপরোয়া গতির শিকার হল বন্যপ্রাণ। মাদারিহাট-বীরপাড়া এশিয়ান হাইওয়ে ৪৮-এ। স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার রাত ১০টা নাগাদ একটি মাকনা হাতি নর্থ খয়েরবাড়ির জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ওই রাস্তা পার হচ্ছিল। মাদারিহাটের সরকারি করাতকলের কাছে দ্রুতগতির একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা মারে। রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে বছর পনেরোর হাতিটি। তার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছিল। যন্ত্রণায় ছটফট করছিল সেটি। খবর পেয়ে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সারা রাত হাতিটির চিকিৎসা চললেও, মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগেই ওই রাস্তাতেই বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় মারা যায় একটি লেপার্ড ক্যাট। তবে পরে ওই প্রাণীর দেহের হদিস মেলেনি।
‘জলদাপাড়া ডেভেলপমেন্ট ফোরাম’-এর সম্পাদক সঞ্জয় দাসের অভিযোগ, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বুক চিড়ে পরিকল্পনাহীন ভাবে এশিয়ান হাইওয়ে তৈরি করা হয়েছে। সে জন্যই বারবার ওই রাস্তায় দূর্ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক বছরে বন্যপ্রাণের পাশাপাশি অনেক মানুষও মারা গিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এই রাস্তায় উড়ালপুল বা আন্ডারপাস না গড়লেও, অন্তত আরও বেশি স্পিডব্রেকার জরুরি। না একই ঘটনা ঘটতে থাকবে।
‘নেচার অ্যান্ড এডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন’-এর (ন্যাফ) প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসুর দাবি, ওই রাস্তায় সিগন্যাল ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে হবে। কারণ প্রচুর পণ্যবাহী গাড়ি জলদাপাড়া-চিলাপাতার ওই রাস্তা দিয়ে রাতে চলাচল করে। ডুয়ার্সের সব রাস্তায় ‘ফ্লুরোসেন্ট’ রঙে ছবি-সহ বিভিন্ন ভাষায় গতি নিয়ন্ত্রণের বার্তা চালকদের দিতে হবে। কারণ গোটা ডুয়ার্সই বন্যপ্রাণীদের করিডর।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও কুমার বিমল বলেন, ‘‘বন দফতরের তরফে এশিয়ান হাইওয়ে কর্তৃপক্ষকে কিছু আবেদন জানানো হয়েছিল। তার মধ্যে কিছু আবেদনে তারা সাড়া দিয়েছেন।’’ তিনি জানান, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ওই রাস্তায় গতি নিয়ন্ত্রণে আর কয়েকটি স্পিডব্রেকার দেওয়ার আর্জি জানানো হবে।