হাতির তাণ্ডবে প্রথমেই ছেড়েছেন ধান-সহ অন্য চাষ। বিকল্প আয়ের খোঁজে বেছে নিয়েছিলেন সুপরি চাষকে। এ বার সেই সুপারি বাগানেও হানা দিল হাতির পাল। যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হল একশোটিরও বেশি ফলন্ত সুপারির গাছ। কালচিনি ব্লকের পূর্ব সাতালি মণ্ডলপাড়ার ঘটনা। কৃষকদের অভিযোগ, প্রতিনিয়ত হাতির তাণ্ডবে বর্তমানে অর্ধেকেরও বেশি সুপারি বাগান খালি হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জীবিকা নিয়ে সংশয়ে পড়েছেন তাঁরা। বক্সা উপক্ষেত্র অধিকর্তা হরিকৃষ্ণণ পিজে বলেন, ‘‘এই এলাকা জঙ্গল সংলগ্ন হওয়ায় প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসে হাতি। তবে হাতির হানা রুখতে আমাদের কর্মীরা নিয়মিত টহলদারি চালাচ্ছে। তবুও কারও ক্ষতি হলে, নিয়ম অনুযায়ী তাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার গভীর রাতে জঙ্গল থেকে হাতির পাল বেরিয়ে হানা দেয় এলাকার বাসিন্দা সুখলাল ওরাঁওয়ের সুপরি বাগানে। গোটা বাগানটি তছনছ করে দেয় হাতির পাল। গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে একশোটিরও বেশি ফলন্ত সুপরি গাছ। ওই কৃষকের কথায়, ‘‘আগে ধান চাষ করতাম। তবে হাতির উপদ্রবে সেই ফসল ঘরে তুলতে পারতাম না। এর পরে সুপরি চাষ শুরু করলাম। সেই সুপরি বিক্রি করেই ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার পাশাপাশি সংসার চলে আমাদের।এ ভাবে প্রতি নিয়ত হাতির হানার ফলে বর্তমানে প্রায় ফাঁকা গোটা সুপারি বাগান। কী ভাবে সংসার চলবে, তা নিয়েই চিন্তায় রয়েছি আমরা।’’ তিনি আফসোস করে বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত দু’শোটিরও বেশি সুপারি গাছ নষ্ট করেছে হাতি। এ বার হয়তো চাষাবাদ বন্ধ করতে হবে।’’
আর এক কৃষক ধীরাজ ওরাঁও বলেন, ‘‘একটি সুপরি গাছ বড় হতে ছয় থেকে সাত বছর লাগে। এক নিমেষেই সেই গাছ ভেঙে ফেলে হাতি। কিছুই করার থাকে না আমাদের। হাতির এই তাণ্ডবের কারণে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে আমার।’’ ঘটনার খবর পেয়ে হাতির পালকে জঙ্গলমুখ করে এবং কৃষককে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে বন দফতর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)