শিল্পস্থাপনে গতি আনতে ৭ ডিসেম্বর গৌড়বঙ্গের শিল্পোদ্যোগীদের নিয়ে ঘটা করে ‘সিনার্জি’ হয়েছিল মালদহের দুর্গাকিঙ্কর সদনে। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ ও বস্ত্র দফতর আয়োজিত সেই সম্মেলনে জেলার প্রচুর শিল্পোদ্যোগী অংশও নেন। অথচ মালদহেরই ফুড পার্কে আবেদন করেও প্লট পাচ্ছেন না অন্তত ১৪ জন শিল্পোদ্যোগী।
ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড হর্টিকালচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই ফুড পার্কে ১০টি প্লট ও দুটি শেড ফাঁকা পড়ে। একাধিক কারখানা বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু শিল্পোদ্যোগী এক দশকের আগে জমি নিয়ে কারখানা না করে ফেলে রেখে দিয়েছেন। ফাঁকা জমিতে প্যান্ডেলের বাঁশ ও কাপড় রেখে ব্যবসা চলছে, চলছে খাটাল। আবার কারখানার বদলে আবাসনও গড়ে তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ। সংস্থার কমন ফেসিলিটি সেন্টারে এখন পুলিশ সুপারের অফিস। শুধু তাই নয়, ফুড পার্কের পরিকাঠামো থেকে শুরু করে নিকাশি, রাস্তাঘাট নিয়েও সমস্যা রয়েছে। যা নিয়ে সরব বণিক সংগঠন।
মালদহ শহর সংলগ্ন কৃষি ফার্ম এলাকায় ফুড পার্ক গড়ে ওঠে ২০০৫ সালে। ফুড পার্কে জমি ছিল ৩৮.১২ একর। এর মধ্যে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের বাইপাস তৈরির সময় ১.১৭ একর জমি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করে। শিল্প কারখানা গড়ে তোলার জন্য ৩৫টি প্লট ও চারটি শেড করা হয়। এর মধ্যে কারখানার জন্য ২৫টি প্লট কয়েক বছর আগে বিলি করা হলেও ১০টি প্লট এখনও ফাঁকা। চারটি শেডের মধ্যে দু’টি শেড এখনও ফাঁকা। প্লটের জন্য আবেদনকারী এক শিল্পোদ্যোগী প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “২০২২ সাল থেকে একটি সর্ষের তেলের কারখানা ওই ফুড পার্কে করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক বার আবেদন করেছি। এ বারও আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও প্লট বিলির ব্যাপারে সদুত্তর পাইনি।” তিনি বলেন, “জমি পেলে তিন মাসের মধ্যে কারখানা চালু করে দেব। কিন্তু জমিই পাচ্ছি না।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক শিল্পোদ্যোগী বলেন, “কয়েক জন সেখানে শিল্পের জন্য জমি নিয়ে বছর দশেকের বেশি ফেলে রেখে দিয়েছেন, অথচ সেই জমি সরকার ফেরত নিচ্ছে না। ওই জমিগুলি পেলে আমরা কারখানা গড়তে আগ্রহী।” ফুড পার্কের একাধিক সমস্যা সমাধানের দাবিতে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়েছে মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিও। সংগঠনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, “ফুড পার্কটি ইংরেজবাজার শহর এলাকায়, নাকি গ্রামীণ এলাকায়—সেটাই সুনির্দিষ্ট ভাবে ‘নোটিফায়েড’ নয়। পাশেই ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অথচ ফুড পার্কের সরাসরি যোগাযোগের সেই সংযোগকারী রাস্তা হয়নি। আমরা চাই দফতর এই ব্যাপারে উদ্যোগী হোক।” উদ্যানপালন দফতরের এক রাজ্য আধিকারিক বলেন, “ফুড পার্কের ফাঁকা প্লট বিলির ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)