Advertisement
E-Paper

হদিশ পেতে নজরদারি ফেসবুকেও

নিখোঁজ হওয়ার কয়েক মাস আগে সঙ্গীতা নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে একটি পোস্ট করেছিলেন। যাতে লেখা ছিল, ‘কেউ চায় না কাউকে ভুলতে। সময় ভুলিয়ে দেয়। কেউ চায় না কাউকে হারাতে। ভাগ্য তা ছিনিয়ে নেয়----’। এর পরে অনেক দিন কোনও পোস্ট করেননি তিনি। ছবিও দেননি ফেসবুকে।

কৌশিক চৌধুরী ও অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৪

নিখোঁজ হওয়ার কয়েক মাস আগে সঙ্গীতা নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে একটি পোস্ট করেছিলেন। যাতে লেখা ছিল, ‘কেউ চায় না কাউকে ভুলতে। সময় ভুলিয়ে দেয়। কেউ চায় না কাউকে হারাতে। ভাগ্য তা ছিনিয়ে নেয়----’। এর পরে অনেক দিন কোনও পোস্ট করেননি তিনি। ছবিও দেননি ফেসবুকে।

তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে পুলিশের মনে হয়েছিল, তিনি কোনও কারণে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট থেকে সরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তদন্তে দেখা গিয়েছে তা একেবারেই নয়। নিখোঁজ হওয়ার এক মাস আগে পর্যন্ত নিজের ফেসবুকে পুরোপুরি সক্রিয় ছিলেন সঙ্গীতা কুন্ডু। গত ৩১ জুলাই যে সংস্থার তিনি কর্মরত ছিলেন, সেখানকার একটি বিজ্ঞাপনের প্রচারকে তিনি ফেসবুকে ‘লাইক’ও করেছিলেন। এই অ্যাকাউন্টিতে তাঁর সংস্থার কর্মী থেকে অনেকেই বন্ধু তালিকায় আছেন। এর পরের মাসে ১৭ অগস্ট ২০১৬-তে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। তারপর থেকে অ্যাকাউন্ট আর ব্যবহার হয়নি।

শুধু তাই নয়, তদন্তে সঙ্গীতার আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টেরও হদিশ মিলেছে। সেটি অবশ্য আরও পুরোনো বলে জানা গিয়েছে। ২০১৩ সালের অগস্ট মাসে শেষবার সেখানে নিজের ছবি পোস্ট করেছিলেন এই তরুণী। তারপরে আর সেটির ব্যবহার হয়নি। সঙ্গীতা যে সংস্থায় কর্মরত সেখানকার কর্মীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, হাসিখুশি স্বভাবের তরুণীটি মাঝেমধ্যেই মোবাইল নম্বর পাল্টাতেন। অফিসের এক শীর্ষ কর্তা জানান, সাতটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতেন ওই তরুণী। প্রতিটি নম্বরের সূত্রে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন কি না তা পুলিশ খতিয়ে দেখছেন। ইতিমধ্যেই তাঁর দু’টি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে।

কিন্তু, নিখোঁজ তরুণীর পরিবারের সদস্যরা প্রশ্ন তুলেছেন, এত গুলো মোবাইলের কল রেকর্ড ঘেঁটেও পুলিশ কোনও সূত্র বার করতে পারল না কেন? সঙ্গীতার এত মোবাইল কোথায় থেকে কার নামে কেনা হয়েছিল তা নিয়েও তদন্তে কি তথ্য মিলেছে সেটাও জানতে চান বাড়ির লোকজন। সঙ্গীতার দাদা শম্ভু কুণ্ডু বলেন, ‘‘এত মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে বোনকে বাধ্য করা হয়েছিল কি না সেটাও সামনে আসা জরুরি। কার নামে সিম কার্ড নেওয়া হয়েছিল সেটাও জনসমক্ষে আসা দরকার। দেখা যাক কতদিনে তা স্পষ্ট হয়।’’

যে সংস্থায় সঙ্গীতা চাকরি করতেন তার কয়েকজন কর্মী জানিয়েছেন, মোবাইল এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটগুলিতে ভালই সক্রিয় ছিলেন সঙ্গীতা। বন্ধু সংখ্যা খুব কম থাকলেও বিভিন্ন সময়ে সাইটগুলিতে তাঁকে চ্যাট করতেও দেখা গিয়েছে। তাই জুলাইয়ের পর এমন কী হল, যাতে তিনি সোশ্যাল সাইটগুলি থেকে ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লেন? ৩১ জুলাইয়ের পর তাঁকে সোশ্যাল সাইটে দেখা যায়নি। তদন্তকারী অফিসারদের একাংশের অনুমান, অগস্ট থেকে সঙ্গীতার কোনও সমস্যার সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। তাই নিয়েই হয়তো ‘ব্যস্ত’ হয়ে পড়েছিলেন। তেমনিই, ২৬ অগস্টের পর তাঁর টাইমলাইনে কোনও বন্ধুর পোস্টও নেই।

পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ফেসবুকে বন্ধুদের পোস্ট রিভিউ করে ছাড়পত্র দেওয়ার পর তা কারও টাইমলাইনে আসার ব্যবস্থা থাকে। সঙ্গীতা তা করে থাকলে, ধরতে হবে ২৬ অগস্ট পর্যন্ত তিনি ফেসবুক ব্যবহার করেছেন। তাই ২৬ অগস্ট পর্যন্ত পোস্টগুলি দেখা যাচ্ছে। আর যাঁরা এই ‘অপশন’ ব্যবহার করেন না, তাঁদের টাইমলাইনে সব বন্ধুদের পোস্ট দেখা যায়। সেক্ষেত্রে সঙ্গীতা নিখোঁজ হওয়ার পরে হয়ত, আর কেউ ‘কোনও কারণে’ তাঁর টাইমলাইনে পোস্ট বা তাঁকে ট্যাগ করে কোনও পোস্ট নাও করে থাকতে পারে।

Facebook
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy