Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
cold storage

বন্ড বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগে ধূপগুড়ির হিমঘরে বিক্ষোভ আলুচাষিদের

কৃষক বিক্ষোভের খবর করতে গেলে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন একটি হিমঘরের কর্তৃপক্ষ।

ধূপগুড়ির হিমঘরে আলুচাষিদের বিক্ষোভ।

ধূপগুড়ির হিমঘরে আলুচাষিদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ১৯:০৪
Share: Save:

জমি থেকে এখনও আলু তোলার কাজ চলছে। সেই আলু মজুত রাখার জন্য বন্ড কেনার ভিড় হিমঘরগুলিতে। সেই আলু রাখার বন্ড বিলি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে সামিল হলেন জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির কৃষকেরা। তাঁদের অভিযোগ হিমঘর মালিকদের বিরুদ্ধে।

কৃষকদের বিক্ষোভ ঘিরে বুধবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে ধূপগুড়ির একাধিক হিমঘরে। কৃষক বিক্ষোভের খবর করতে গেলে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন একটি হিমঘরের কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ধূপগুড়ি ব্লকের বিভিন্ন হিমঘরে আলু রাখার জন্য বন্ড বিতরণ। আর বন্ড বিতরণের শুরুতেই কৃষকদের অভিযোগ, হিমঘর কর্তৃপক্ষ পাইকার এবং বড় ব্যবসায়ীদের গোপনে আলুর বন্ড দিয়ে দিচ্ছেন। যার ফলে কৃষকরা প্রয়োজন মত আলুর বন্ড পাচ্ছেন না। সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও মিলছে না চাহিদা মাফিক বন্ড। আলুর বন্ড নিতে আসা আলুচাষিদের আপত্তি তা নিয়েই।

বুধবার ধূপগুড়ি কানাইয়া প্রসাদ হিমঘর এবং গাদং ডিজে হিমঘরে সকাল থেকেই আলুর বন্ড নেওয়ার জন্য কৃষকেরা ভিড় জমিয়েছিলেন। এমনকি, কৃষকদের পাশাপাশি বাড়ির মহিলারাও লাইনে দাঁড়ান আলুর বন্ড কেনার জন্য। কিন্তু সকাল থেকে দাঁড়িয়ে থাকলেও মিলছিল না বন্ড । একজন ব্যক্তিকে ১০০ প্যাকেটের বেশি আলুর বন্ড দেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ, অনেককে ‘বন্ড নেই’ বলেও জানিয়ে দেন হিমঘর কর্তৃপক্ষ হচ্ছে ।

‘হিমঘর ভর্তি হয়ে গিয়েছে’ বলে কৃষকদের জানানো হয় কানাইয়া প্রসাদ হিমঘর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে। তার পরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। স্থানীয় আলুচাষি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমার বাড়ি ধূপগুড়িতেই। অথচ দু’দিন ঘুরেও আলুর বীজ রাখার জন্য বন্ড পেলাম না। যদি স্থানীয় সব কৃষককে ১০০ প্যাকেট করে বন্ড দিলেও হিমঘরে অনেক জায়গা থাকবে। আসলে মোটা টাকার বিনিময়ে বড় ব্যবসায়ীদের বন্ড দিচ্ছে হিমঘর কতৃপক্ষ। এ বার হয়তো বলবে হিমঘর ভর্তি হয়ে গিয়েছে।’’

আরেক কৃষক চন্দন রায় জানান, ‘‘সকাল ৭ টা থেকে আছি এখনো বন্ড পাইনি। এ বার বন্ডের জন্য প্যাকেট প্রতি অগ্ৰিম ১৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু সেই টাকা দিয়েও বন্ড পাওয়া যাচ্ছে না।’’

এদিকে হিমঘরে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে জানান, আলু রাখার জন্য বন্ড না পেলে প্রচণ্ড ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাদের। কারণ এখনও ক্ষেতের মধ্যে রয়েছে আলু। যদি তা তোলার পর হিমঘরে রাখা না যায় তা হলে বাইরে বৃষ্টিতে ভিজে বা প্রাকৃতিক কারণে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা। যার ফলে ব্যাপক অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বেন কৃষকরা। তাই বিভিন্ন হিমঘরে সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। কিন্তু হিমঘর কর্তৃপক্ষের কারসাজিতেই চাহিদামতো বন্ড মিলছে না বলে তাঁদের অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE