E-Paper

‘বিচ্ছিন্ন’ দার্জিলিঙের দাবি নীরজের

দার্জিলিং পাহাড়ের বিজেপি বিধায়ক সমর্থনের পক্ষে থেকেও আলাদা দার্জিলিঙের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তা আদতে ‘বাংলা বিভাজনের’ দাবি বলেই পাহাড়ের নেতারা মনে করেছেন।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৫
জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বা।

জিএনএলএফ নেতা নীরজ জিম্বা। —ফাইল চিত্র।

দার্জিলিং পাহাড়কে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিভাজনের বদলে বিচ্ছেদের দাবি তুললেন জিএনএলএফ নেতা বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বা। সম্প্রতি বিধানসভায় রাজ্য সরকার বাংলা বিভাজনের বিপক্ষে প্রস্তাব আনে। উল্লেখযোগ্য ভাবে শাসক দলের সঙ্গে বিজেপিও বিভাজনের বিপক্ষের ওই প্রস্তাবে পূর্ণ সমর্থন জানায়। সেখানে দার্জিলিং পাহাড়ের বিজেপি বিধায়ক সমর্থনের পক্ষে থেকেও আলাদা দার্জিলিঙের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তা আদতে ‘বাংলা বিভাজনের’ দাবি বলেই পাহাড়ের নেতারা মনে করেছেন।

বিধায়ক নীরজ জিম্বা বলেছেন, ‘‘দার্জিলিং তো বাংলার অংশ এক সময় ছিলই না। সিকিম থেকে তা এসেছে। তাই বিভাজনের প্রশ্ন নেই। আমরা বলছি, পুরনো চুক্তি মেনে দার্জিলিংকে ডিমার্জার বা বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হোক।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দার্জিলিং এক সময় সিকিম রাজার এলাকা ছিল। ১৮৩৫ সাল নাগাদ তা ব্রিটিশ সরকারের হাতে যায়। পরবর্তী কালে সিকিম ভারতের অঙ্গরাজ্য হয়। ১৯৫৪ সালে দার্জিলিং আলাদা এলাকা হয়ে পশ্চিমবঙ্গের অংশ হয়েছে।
সে সময় দার্জিলিং ভাগলপুর প্রদেশের অংশও ছিল।

সেই সিকিম চুক্তির ইতিহাস ধরে বেশ কিছু দিন যাবৎ দার্জিলিংকে আলাদা করার দাবি তোলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, কোচবিহারের মতো বিভাজন নয়। দার্জিলিংকে ‘ডিমার্জার’ বা ফের বিচ্ছিন্ন করা হোক। বিজেপি-বিরোধী পাহাড়ের নেতারা জানাচ্ছেন, আসলে বিজেপি বিধানসভায় বিভাজনের পক্ষে থাকায় স্থানীয় স্তরে আবেগকে জিইয়ে রাখার জন্য নতুন পথ জোটসঙ্গীদের খুঁজে দিচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য, ‘‘কোনও কিছুই এ নিয়ে বলার নেই।’’

লোকসভা ভোটের পর থেকে পাহাড়ে বিজেপির জোটসঙ্গী জিএনএলএফ পাহাড়ের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হয়েছে। দলের তরফে বিভিন্ন এলাকায় কালো পতাকা ঝুলিয়ে বিক্ষোভও দেখানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার পাহাড় সমস্যা নিয়ে কিছু করছেন না বলে অভিযোগও করা হচ্ছে। তেমনিই ১১ জনজাতির তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতিও ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ষষ্ঠ তফসিলের দাবি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। এই অবস্থায় পাহাড়ের আগামী পুরসভার, বিধানসভা ভোটে জিএনএলএফ পাহাড়বাসীর সামনে কী প্রতিশ্রুতি নিয়ে যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সেই জায়গা থেকে নতুন পথ এ বার তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে নেতারা মনে করছেন।

প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান তথা গোর্খা নেতা বিনয় তামাং বলেছেন, ‘‘সিকিম থেকেই দার্জিলিং তৈরি হয়েছে, এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। তবে পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে নজর রাখছি। এখনই সব কিছু বলছি না।’’ বিজেপি-বিরোধী পাহাড়়ের শাসক দল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চাও কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। দলের অন্য়তম সদস্য জ্যোতিকুমার মুখিয়া বলেছেন, ‘‘বাংলা তো ভাগ হবে না, বিধানসভায় তা নিয়ে পাশ হয়েছে প্রস্তাব। বঙ্গ বিজেপিও তাতে সায় দিয়েছে। এ বার পাহাজ়ের বিজেপি সাংসদ, বিধায়কেরা কী বলবেন! তাই নতুন পথ খোঁজা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Darjeeling Gorkhaland

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy