E-Paper

উধাও বোর্ড, ‘দখল’ জমি

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, যে জমিগুলিতে সরকারি বোর্ড টাঙানো হয়েছিল, তার বেশিরভাগ সরকারের হাতেই ছিল। কিছু জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে হতবাক হন প্রশাসনের আধিকারিকের।

নীতেশ বর্মণ

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৮
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দখল রুখতে সরকারি জমি চিহ্নিত করে বোর্ড টাঙানো হয়েছিল। বোর্ড সরিয়ে ফের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়। ভূমি সংস্কার দফতরের তরফে পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। মহকুমায় নতুন করে জমি মাফিয়ারা মাথাচারা দিচ্ছে কিনা, উঠছে প্রশ্ন।

সরকারি জমি চিহ্নিত করতে কখনও তা ঘিরে দেওয়া, কোথাও গাছ লাগানো হয়েছিল। অভিযোগ, তার পরেও দখল আটকাতে পারেনি প্রশাসন। নতুন করে বোর্ড টাঙিয়ে কতটা দখল আটকানো গেল, সেটাই বড় প্রশ্ন।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, যে জমিগুলিতে সরকারি বোর্ড টাঙানো হয়েছিল, তার বেশিরভাগ সরকারের হাতেই ছিল। কিছু জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে হতবাক হন প্রশাসনের আধিকারিকের। কারণ, কোথাও পাকা দেওয়ালে জমি ঘিরে দেওয়া হয়, কোথাও কোনও নির্মাণ বা ভবন তৈরি করা হয়েছে। কতগুলিতে লিজ়ের আবেদনও করেছেন দখলকারীরা। কয়েকটি জমির অবৈধ কাগজও তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে সরকরি জমি উদ্ধারে প্রশাসন কতটা সক্রিয়, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

বিরোধীদের অভিযোগ, বাস্তবে সরকারি জমি দখলমুক্ত করাই হয়নি। বরং যে জমিগুলি দখল হয়ে রয়েছে, সেগুলি উদ্ধারে প্রশাসন যে ব্যবস্থা নেবে না, তা যেন ঘুরপথে মেনে নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি শিলিগুড়ি গ্রামীণ এলাকার মাটিগাড়া, পাথরঘাটা, চম্পাসারি, মনিরাম, নকশালবাড়ি, বুড়াগঞ্জ, খড়িবাড়ি, বিধাননগর, ঘোষপুকুর এবং ফাঁসিদেওয়ার কয়েকটি জায়গায় নতুন করে দখলের ‘ছক’ করা হয়েছে বলে সূত্রে খবর। জঙ্গলের কাছে, নদীর চরে বা পরিত্যক্ত জমিই প্রথম পছন্দ দখলকারীদের। সূত্রের খবর, প্রথম দিকে অস্থায়ী ভাবে কাউকে দিয়ে দখলের ছক কষা হয়। পরে সেখানে পাকা দেওয়াল বা ঘর, কারখানা তৈরি করা হয়। কয়েকটি জায়গায় আবার দখল করা জমির জন্যই পাট্টার আবেদন জমা পড়ে। অভিযোগ, সেই পাট্টা করে দেওয়ার তদারকিতে তৃণমূল নেতাদেরই দেখা যায়। এ ভাবে চলতে থাকলে দখল কোনও ভাবেই যে আটকানো যাবে না, তা প্রশাসনের আধিকারিকদেরই একাংশই মনে করছেন।

কিছু দিন আগে জমি দখলের অভিযোগে তৃণমূলের নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর কয়েক জন সহযোগীকেও ডেকে জেরা করেছিল পুলিশ। কিন্তু সেটাই যেন ‘শেষ’। চম্পাসারিতে জঙ্গলের জমিতে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ভবন নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিনের। অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধেও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘জমি দখলের অভিযোগে পেলে ভূমি সংস্কার দফতর খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে নানা দিন থেকে বাধা পেয়ে বেশি দূর এগোনো যায় না। তবে প্রশাসন বর্তমানে অনেকটাই সক্রিয়।’’

ছবি: স্বরূপ সরকার

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Government Land Siliguri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy