Advertisement
E-Paper

মালদহে বৈষ্ণবনগর ত্রাণ শিবিরে রাজ্যপাল, ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বললেন, বাইরে বিক্ষোভ স্থানীয়দের

মুর্শিদাবাদে অশান্তির জেরে বাড়ি ছেড়ে অনেকেই পাশের জেলা মালদহে আশ্রয় নিয়েছেন। ঘরছাড়াদের একাংশ আশ্রয় নিয়েছেন বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাই স্কুলে। শুক্রবার সেই শিবিরের বাইরেই দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ২১:০৯
Governor CV Anand Bose visits relief camp in Baisnabnagar, Malda and meets displaced people

বৈষ্ণবনগরের আশ্রয়শিবিরে ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —নিজস্ব চিত্র।

শুক্রবার সন্ধ্যায় মালদহের বৈষ্ণবনগরে ঘরছাড়াদের ত্রাণ শিবিরে পৌঁছেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি যখন শিবিরের ভিতরে ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন বাইরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়দের একাংশ। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ঘরছাড়াদের সঙ্গে রাজ্যপালের কী কথা হল, তা সংবাদমাধ্যমের সামনে জানাতে হবে। শুধু তা-ই নয়, অনেকেই পুলিশি ব্যারিকেড টপকে ক্যাম্পের মধ্যে ঢুকে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পুলিশ বাধা দিতেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়।

মুর্শিদাবাদে অশান্তির জেরে বাড়ি ছেড়ে অনেকেই পাশের জেলা মালদহে আশ্রয় নিয়েছেন। ঘরছাড়াদের একাংশ আশ্রয় নিয়েছেন বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাই স্কুলে। সেই ক্যাম্প চত্বর সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। শুক্রবার দুপুরে সেই আশ্রয়শিবিরে গিয়েছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যেরা। তাঁরা আশ্রয়শিবির ছাড়তেই দফায় দফায় উত্তেজনা তৈরি হয় বৈষ্ণবনগরে। সন্ধ্যায় সেই শিবিরে রাজ্যপাল পৌঁছোতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

শুক্রবার সকাল থেকে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় পারলালপুর হাই স্কুল। কাউকেই ভিতরে ঢুকতে বা বেরোতে দেওয়া হয়নি। আটকে দেওয়া হয় ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে আসা তাঁদের আত্মীয়স্বজনদেরও। বিকেলে মালদহের সার্কিট হাউসে পৌঁছোন রাজ্যপাল। সেখানে কিছু ক্ষণ থেকে তিনি যান বৈষ্ণবনগরের ত্রাণ শিবিরে। তিনি শিবিরের ভিতরে ঢোকার পর বাইরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। তাঁদের দাবি, ঘরছাড়াদের সঙ্গে রাজ্যপাল কী কথা বলছেন, তা দেখাতে হবে সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু পুলিশ প্রথমে সেই দাবি মানতে নারাজ ছিল। তবে শেষপর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের শর্ত মেনে নেয় তারা। রাজ্যপালের নিরাপত্তার জন্য তৈরি করা অস্থায়ী ব্যারিকেডও তুলে নেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকেই মহিলা। তাঁদের আটকাতে আনা হয় মহিলা পুলিশ। সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় র‌্যাফ। আনা হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল।

রাজ্যপালের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন ঘরছাড়ারা। নিজেদের নানা সমস্যা, অভাব-অভিযোগ তাঁকে জানান তাঁরা। ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘সমাজের একটা নির্দিষ্ট সম্প্রদায় এখানে আক্রান্ত হয়েছে। এক দল মারবে, আর এক দল আক্রান্ত হবে, এটা কখনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় হতে পারে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখানে যে অশান্তি হয়েছে, তা কোনও সুস্থ মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমি এখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলেছি, এখানে ভয়ের পরিস্থিতি বিরাজ করেছে। ভয়ের বাতাবরণের মধ্যে মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না।’’ রাজ্যপালের মতে, যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার স্থায়ী সমাধান হওয়া উচিত।

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের আবহে গত শুক্রবার অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জ-সহ কিছু এলাকায়। সেই গোলমালে তিন জন নিহত হন। ঘটনার তদন্তে বুধবার সিট গঠন করেছে পুলিশ। অশান্তির জেরে সাময়িক ভাবে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হলেও গত ৪৮ ঘণ্টায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রশাসনের উদ্যোগে দ্রুত বদলাচ্ছে পরিস্থিতি। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে জনজীবন। অশান্তি কবলিত এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক করার পাশাপাশি ঘরছাড়া পরিবারগুলিকে ঘরে ফেরাতে বিশেষও উদ্যোগী হচ্ছে প্রশাসন।

Murshidabad Unrest CV Ananda Bose
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy