বড় দেবীর মন্দিরে তখন চলছে বিসর্জনের প্রস্তুতি। — নিজস্ব চিত্র।
৫০০ বছরের রীতি মেনে বিসর্জন সম্পন্ন হল কোচবিহারের বড় দেবীর। ৫০০ বছর আগে কোচবিহারের মহারাজা নরনারায়ণের আমলে প্রথম শুরু হয় বড় দেবীর পুজো। কথিত আছে, মহারাজা নরনারায়ণের স্বপ্নে এসে দেবী আদেশ দেন, পূজো করার জন্য। তার পর থেকেই মহা ধুমধামের সঙ্গে কোচবিহারের বড় দেবী বাড়িতে শুরু হয় পূজা। চলতে চলতে ৫০০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আজও এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আবেগ আর নিষ্ঠা। দশমীর সকাল থেকেই বিসর্জন উপলক্ষে ভিড়ে ভিড়াক্কার মন্দির চত্বর।
দশমীর পুজোর পর খুলে দেওয়া হয় বড় দেবীর মন্দিরের গেট। বড় দেবীকে পায়ে সিঁদুর, কদম ফুল ছোয়ানোর পর সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন মহিলারা। এর পর মূল মন্দির থেকে বড় দেবীর প্রতিমাকে ট্রলিতে নিয়ে যাওয়া হয় মন্দিরের পাশে লম্বা দিঘির নিরঞ্জন ঘাটে। সেখানে বড় দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়। দেবীর বিসর্জন অন্যান্য প্রতিমা বিসর্জনের থেকে একটু ভিন্ন। নিরঞ্জন ঘাটে প্রতিমা আনার পর বড় দেবীর মূর্তিকে খণ্ড খণ্ড করে তার পর তা বিসর্জন দেওয়া হয়। এই রীতি চলে আসছে রাজার আমল থেকেই।
বিসর্জনের ঠিক আগে শুয়োর বলির প্রাচীন প্রথা রয়েছে। সেই প্রথা মেনে বলির পর বড় দেবীর বিসর্জন হয়। দেবত্র ট্রাস্টবোর্ডের পুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রতি বছরের মতন এ বারও নিয়মনীতি এবং তিথি মেনে বড় দেবীর বিসর্জন সম্পন্ন। আমাদের মন আজ ভারাক্রান্ত। দেবী আবার কৈলাসে গমন করবেন। আমাদের আবার একটি বছরের অপেক্ষা।’’
সিঁদুর খেলতে এসে বৈজয়ন্তী রায় বলেন, ‘‘প্রতি বছর সিঁদুর খেলতে আমরা সকাল সকাল দেবী বাড়ি মন্দিরে চলে আসি। এই দিনটা আমাদের দুঃখের সঙ্গেই আনন্দেরও। এই কয়েক দিন চার দিক আলোয় ঝলমলে ছিল। কিন্তু কাল থেকেই আবার আগের মতো হয়ে যাবে। তাই মন আজ খানিক ভারাক্রান্তও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy