বুধবার ১২ বছরের ছেলেকে নিয়ে আত্মহত্যা করেন প্রদীপ বর্মণ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রাক্তন গ্রামপ্রধানের নাবালক ছেলে-সহ স্বামীর আত্মহত্যার পর ফের প্রকাশ্যে দিনহাটায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। তৃণমূলের একাংশের কার্যকলাপের ফলে মানসিক চাপে ওই দু’জন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ শাসকদলের এক স্থানীয় নেতার। সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া ও জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নুর আলম হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠলেও তা অস্বীকার করেছেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার ১২ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়ির পাশে রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন প্রদীপ বর্মণ (৩৫)। দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের গীতালদহ ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বীথিকা বর্মণের স্বামী প্রদীপের কাছে টাকা চেয়ে ঠিকাদারেরা হুমকি দিত বলেও অভিযোগ। প্রদীপের ভাই সন্দীপ বর্মণের দাবি, ‘‘বৌদির বিরুদ্ধে অনাস্থার পর থেকে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে দাদা। টাকার জন্য দিনেরাতে হুমকি দিয়ে ঠিকাদারদের ফোন আসত।’’
প্রসঙ্গত, ৬ জুলাই অনাস্থা প্রস্তাবে বীথিকাকে অপসারিত করে মুক্তা বর্মণ রায়কে প্রধান হিসাবে নির্বাচিত করা হয়। গীতালদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আবু আল আজাদের অভিযোগ, ‘‘জগদীশচন্দ্র এবং নুর আলম পরিকল্পিত ভাবে সিতাইয়ের চামটা গ্রাম পঞ্চায়েত ও গীতালদহ ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থা এনে প্রধানকে অপসারিত করে। নুর আলমের নেতৃত্বে সন্ত্রাস চলছে। প্রদীপের কাছে ১ কোটি টাকা দাবি করেছে নুর আলম। সে চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে প্রদীপ।’’
যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জগদীশচন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে ভোটপ্রচারে জড়িতরাই এই মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে। বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি, পঞ্চায়েতের ঠিকাদাররা প্রদীপের থেকে টাকা পেত। প্রদীপের ভাইয়ের কথা মতো তাতেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যা করে সে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি দুর্ঘটনা, তদন্ত করুক পুলিশ।’’ কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘পরিবার জানিয়েছে, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন প্রদীপ। তাঁর উপর কিছু চাপ ছিল। তবে কিসের চাপ, তা জানা যায়নি। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে আমরাও দলীয় ভাবে বিষয়টি দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy