Advertisement
২৬ অক্টোবর ২০২৪
Kanchenjunga Express Accident

মনু কুমারের সঙ্গে কথার অপেক্ষায় তদন্তকারীরা

রেলের আধিকারিকেরা নার্সিংহোমে নিয়মিত যাচ্ছেন। তাঁরা কথা বলতে চাইছেন। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির জন্য এখনও মনুর সঙ্গে কথা বলতে পারেননি বলে দাবি করেন।

উদ্বিগ্ন মনু কুমারের বাবা, মা। শিলিগুড়িতে।

উদ্বিগ্ন মনু কুমারের বাবা, মা। শিলিগুড়িতে।  নিজস্ব চিত্র।

সৌমিত্র কুন্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ০৮:৩৫
Share: Save:

মালগাড়ির অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট মনু কুমারের শারীরিক অবস্থা এখনও ঠিক হয়নি। তাই তাঁর সঙ্গে এখনও কারও দেখা করার অনুমতি দেননি চিকিৎসকেরা। এ দিন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেখেন তাঁকে। তাঁকে আরও কয়েক দিন দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরেই তিনি কিছুটা আচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছেন বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি। পরিবারের লোকদের সঙ্গেও দেখা করা, কথা বলতেও অনীহা প্রকাশ করছেন মনু কুমার। স্ত্রী কিরণ নার্সিংহোমে যাচ্ছেন। তবে সব সময় তিনিও তাঁর সামনে যাচ্ছেন না। বিহারের বাড়ি থেকে মা দ্রৌপদী দেবী এবং বাবা রঘুনন্দন চৌধুরী এসেছেন। যে ওয়ার্ডে মনুকে রাখা হয়েছে সেখানে বাইরে থেকে কাচের দরজা দিয়েই তাঁরা ছেলেকে দেখেছেন। তবে কথা বলতে পারেননি।

তদন্তের জন্য রেলের আধিকারিক এবং তদন্তকারীরা মনু কুমারের সুস্থতার জন্য অপেক্ষা করছেন। কারণ, তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারলে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত অনেক রহস্যই পরিষ্কার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রেলের আধিকারিকেরা নার্সিংহোমে নিয়মিত যাচ্ছেন। তাঁরা কথা বলতে চাইছেন। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির জন্য এখনও মনুর সঙ্গে কথা বলতে পারেননি বলে দাবি করেন।

দ্রৌপদী বলেন, ‘‘সাত বছর ধরে অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট হিসাবে কাজ করছে। দুই বছর নিউ জলপাইগুড়িতে কাজ করছে। কাজে কখনও, কোনও সমস্যার কথা কোনও দিন বলেনি। এমন ঘটনা কী ভাবে হল, বুঝতে পারছি না। ভগবান ওকে বাঁচিয়েছেন।’’ এক দশক আগে দ্রৌপদীর আর এক সন্তান মারা গিয়েছেন ডেঙ্গিতে অসুস্থ হয়ে। সে ঘটনা এবং মনুর দুর্ঘটনার কথা বলতে বলতে তিনি কেঁদে ফেলেন। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে জখমদের দেখতে যান। পরে, খালপাড়ার নার্সিংহোমে মনু কুমারকেও দেখতে যান।

দুর্ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যুর পরে, নতুন করে কোনও মৃত্যুর খবর নেই। তবে জখম তিন জনের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ কাটেনি বলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। এ দিন বিকেল পর্যন্ত ৩০ জন জখম ভর্তি রয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলের পরে, ছ’জনকে ছুটি দেওয়া বা অন্যত্র ‘রেফার’ করা হয়েছে।

এ দিন মালদহের পুতুল মণ্ডল, তাঁর স্বামী এবং ছেলেকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তবে তাঁদের পরিচিত স্বপন বিশ্বাস চিকিৎসকদের জানান, পুতুলের শ্বাসকষ্ট রয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ হননি। তা হলে কেন তাঁকে ছুটি দেওয়া হচ্ছে! পুতুলের স্বামী ইন্দ্রজিৎ মণ্ডলের কাঁধে-বুকে লেগেছে। দম্পতির সাত বছরের ছেলে শিবকে দেখে পুরোপুরি সুস্থ নয় বলে মনে হচ্ছে।
সিনিয়র চিকিৎসকেরা তা জানার পরেই, ছুটি বাতিল করেন। ওই পরিবারকে নতুন করে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে। অন্তত আরও ২৪ ঘণ্টা তাঁদের নজরদারিতে রাখার পরেই ছুটি দেওয়া হবে কি না, তা দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে। পক্ষান্তরে, জখম অনেক রোগী আবার নিজেরাই ছুটির জন্য চাপাচাপি করছেন বলেও হাসপাতাল সূত্রের দাবি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, চিকিৎসক কোনও আহতকে ছুটি পাওয়ার উপযুক্ত মনে করলে, তবেই ছুটি দেবেন। ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা সুশীল মণ্ডলের শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনও উদ্বেগ কাটেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Kanchenjunga Express Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE