জিশান আলমের বাড়িতে বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। ছবি: সুমন মণ্ডল
আরও একটি দেহ শনাক্ত হল। বেঁচে ফিরলেন না কোচবিহারের শীতলখুচির হরিনাথ। সোমবার দুপুরে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের একটি হাসপাতালে কোচবিহারের শীতলখুচির হরিনাথ বর্মণের (৩২) দেহ শনাক্ত করলেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা।এ দিন সকালেই বালেশ্বরে পৌঁছন হরিনাথের জেঠু মনীন্দ্রনাথ বর্মণ ও তাঁর স্ত্রী বিউটি বর্মণ। সেখান থেকে ভুবনেশ্বর যান তাঁরা। মনীন্দ্রনাথ জানান, ভুবনেশ্বরের একটি হাসপাতালে হরিনাথের দেহ শনাক্ত করেন তাঁরা। রাতেই বাড়ির উদ্দেশে তাঁরা রওনা হবেন বলে জানান। এ দিন কান্নায় ভেঙে পড়ে হরিনাথের স্ত্রী বলেন, ‘‘এ ভাবে চলে যাবে, কখনও ভাবিনি! এখন আমাদের বেঁচে থাকা কষ্টের।’’ হরিনাথের ছোট দুই সন্তান রয়েছে। বাড়িতে তাঁর বাবা রণজিৎ বর্মণ ও মা কল্পনা বর্মণ কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
দিনহাটার ওকরাবাড়ির জিশান আলমের খোঁজ অবশ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তাঁর খোঁজে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতাল ঘুরে চলছেন পরিবারের সদস্যেরা। এ দিন বালেশ্বর থেকে ফোনে জিশানের দাদা ফিরোজ রহমান এবং আলমগির হক জানান, এখন পর্যন্ত দশটি হাসপাতালে খোঁজ করেছেন তাঁরা। যে ভাবে স্থানীয় প্রশাসন তাঁদের বলছে, সে ভাবেই প্রতিটি হাসপাতাল যাচ্ছেন তাঁরা। ফিরোজ বলেন, ‘‘ভুবনেশ্বরের ছ’টি, বালেশ্বরে দু’টি এবং ঘটনাস্থলের কাছে দু’টি হাসপাতালে জিশানকে তন্নতন্ন করে খুঁজেছি। এখনও খোঁজ মেলেনি।’’
জিশানের পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবার দিনহাটা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়, জিশান যে অবস্থায় থাকুন, তাঁকে যেন উদ্ধার করে যাতে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জিশানের আত্মীয় হাফিজুর রহমান, আইয়ু হক বলেন, ‘‘ট্রেন দুর্ঘটনায় রাজ্য সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। রেল দফতরের কোনও গাফিলতি রয়েছে, সে জন্য ভাইকে এখনও খুঁজে পাচ্ছি না।’’ জিশানের স্ত্রী সাবানা বিবিকে রবিবার রাতে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছে।
দিনহাটার নিগমনগরের শিবা রায়ের দেহ রবিবার সন্ধ্যায় তাঁর পরিবারের সদস্যেরা শনাক্ত করেন। গোটা পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েছে। মা লক্ষ্মী রায় কাঁদতে কাঁদতে মাঝে মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। শিবার বাবা অরুণাচলে শ্রমিকের কাজ করতেন। সেখান থেকে তিনি বালেশ্বর রওনা হয়েছেন। শিবার জেঠা ভরত রায় ঘটনার রাতেই বালেশ্বরে গিয়েছেন। ভরত বলেন, ‘‘শিবাকে চিহ্নিত করতে পেরেছি। রাতেই সম্ভবত মৃতদেহ নিয়ে রওনা হতে পারব।’’ আর এক ট্রেন যাত্রী, দিনহাটার নিগমনগরের বামনটারির নব্যেন্দু গোস্বামী আগের থেকে কিছুটা সুস্থ। তাঁর খুড়তুতো ভাই পঙ্কজ বলেন, ‘‘সে ভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না। ভাল চিকিৎসা না হলে, দ্রুত সুস্থ করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। আমরা চাই, স্থানীয় প্রশাসন চিকিৎসার দিকে নজর দিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy