Advertisement
E-Paper

উত্তরে জেলা ভাঙছেন মমতা, শঙ্কায় সিপিএম

উত্তরবঙ্গে একের পর এক নতুন জেলাকে স্বীকৃতি দিয়ে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতে বিপদের লাল সঙ্কেত দেখছে সিপিএম! এক দিকে যেমন উত্তরবঙ্গ জু়ড়ে নানা জনগোষ্ঠীর আরও বিভিন্ন দাবি সামনে এসে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠার আশঙ্কা, তেমনই তাদের উদ্বেগ নিজেদের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখা নিয়েও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৬

উত্তরবঙ্গে একের পর এক নতুন জেলাকে স্বীকৃতি দিয়ে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতে বিপদের লাল সঙ্কেত দেখছে সিপিএম! এক দিকে যেমন উত্তরবঙ্গ জু়ড়ে নানা জনগোষ্ঠীর আরও বিভিন্ন দাবি সামনে এসে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠার আশঙ্কা, তেমনই তাদের উদ্বেগ নিজেদের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখা নিয়েও।

কিছু দিন আগে পর্যন্তও উত্তরবঙ্গে বিরোধী হিসাবে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের পায়ের তলায় শক্ত জমি ছিল। দক্ষিণবঙ্গে যতই তৃণমূলের ঝড় চলুক। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। প্রথমে আলিপুরদুয়ার, তার পরে কালিম্পংকে জেলার মর্যাদা দিয়ে স্থানীয় মানুষের ভাবাবেগ ছুঁয়ে ফেলেছেন মমতা। সিপিএম নেতৃত্বের উদ্বেগ, এই ধারা অব্যাহত থাকলে উত্তরের রাজনীতিটা ভাগ হয়ে যাবে নিজস্ব দাবি নিয়ে আন্দোলনকারী জনগোষ্ঠী ও তাদের সংগঠন এবং সেই দাবির বিবেচক হিসাবে শাসক দলের মধ্যে। আলাদা করে সিপিএম বা বাম রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা রাখা মুশকিল হবে।

দলের সাম্প্রতিক রাজ্য কমিটির বৈঠকে উত্তরবঙ্গের এই পরিস্থিতি নিয়েই সরব হয়েছিলেন সিপিএমের জেলা নেতারা। দার্জিলিঙের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বৈঠকে বলেন, মমতা যে ভাবে জেলা গড়ে চলেছেন, তার প্রেক্ষিতে দলকে কোনও একটা অবস্থান নিতে হবে। সাংগঠনিক স্তরে খোঁজখবর নিয়েছে। এর মধ্যেই শিলিগুড়িকে জেলা করার দাবি তুলেছে কংগ্রেস। নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন এলাকা বা ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, রাজগঞ্জকে শিলিগুড়ি জেলার আওতায় নেওয়ার দাবি উঠে এসেছে। শোনা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী শীঘ্রই কোচবিহারে এসে রাজবংশীদের জন্য কাউন্সিলের ঘোষণা করবেন। তরাই-ডুয়ার্স নিয়েও আলাদা কাউন্সিল বা পর্ষদ হবে। এই ক্ষেত্রে সিপিএমের করণীয় কী থাকবে?

জলপাইগুড়ির জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য আবার রাজ্য কমিটিতে সরব হয়েছেন তাঁর জেলার সম্ভাব্য বিভাজন নিয়ে। কিছু দিন আগেই আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, স্বাধীনতার পর থেকে জলপাইগুড়ি চার বার ভাগ হয়েছে। আর কত বার মেনে নেওয়া হবে? বৈঠকে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র পরামর্শ দিয়েছেন, যেখানে প্রয়োজন, সক্রিয় হস্তক্ষেপ করতে হবে। দলকে পথে নামতে হবে। তার জন্য বিক্ষোভ ও প্রচার কমিটিতে (অ্যাজিট-প্রপ কমিটি) আলোচনা করে নিতে হবে।

দলের মধ্যে করণীয় ঠিক করতে আলোচনা চললেও তৃণমূলের রাজনীতির বিরুদ্ধেই যে তাঁরা দাঁড়াতে চান, তার ইঙ্গিত মিলছে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্যে। তাঁর মতে, তৃণমূল নেত্রী বিমল গুরুঙ্গকে বোতলবন্দি করতে চেয়ে উত্তরবঙ্গকে অসম বানিয়ে ফেলছেন! এর মধ্যেই অন্তত ১৫টা কাউন্সিল সেখানে গড়া হয়ে গিয়েছে। অসমে এক সময়ে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের বাইরে ৪০-৫০টা কাউন্সিল করা হয়েছিল। কিন্তু সে সব করেও কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত ওখানে জমি ধরে রাখতে পারেনি। অশোকবাবুর কথায়, ‘‘আমরাও জাতিসত্তার আর্থ-সামাজিক বিকাশের পক্ষে। কিন্তু জাতিসত্তাকে রাজনৈতিক স্বার্থে এ ভাবে ব্যবহার করতে থাকলে পরিণাম ভাল হবে না।’’

CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy