Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পঞ্জাবের যুবককে গুলি, রহস্য

ভিন রাজ্যের দুই যুবককে গুরুতর জখম অবস্থায় পাওয়া গেল মালদহের কালিয়াচকের মোথাবাড়ি থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৬ ০২:৫৫
Share: Save:

ভিন রাজ্যের দুই যুবককে গুরুতর জখম অবস্থায় পাওয়া গেল মালদহের কালিয়াচকের মোথাবাড়ি থেকে।

অমরদীপ সিংহ নামে এক যুবকের কোমরের নীচে গুলি লাগে। অমিতকুমার নামে আর এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁরা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে তাঁদের কাছ থেকে জেনেছে, ওই তিন যুবক গুয়াহাটিতে যাচ্ছিলেন, পথে মালদহ স্টেশনে তাঁরা নেমে পড়েন।

কিন্তু কেন মালদহে নামলেন বা কোন ট্রেনে করে তাঁরা মালদহে এসেছেন, তা পরিষ্কার করে বলতে পারেননি। যে হোটেলে তাঁরা উঠেছিলেন সেখানেও কোনও পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি। হোটেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা ভোর ৬টা নাগাদ সেখানে যান। গুয়াহাটি যাওয়ার রাস্তাতেই তাঁরা সেখানে এসেছেন বলেও জানান। কিন্তু পরিচয়পত্র চাওয়া হলে তাঁরা জানান, সকালে জেরক্সের দোকান খুললে তাঁরা পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি দেবেন। কিন্তু তা আর দেওয়া হয়নি। তিন জনেই জানিয়েছেন, তাঁদের পেশা চাকরি। কিন্তু কী চাকরি তাঁরা করেন, তা-ও জানা যায়নি।

পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন, তিন জনেই পঞ্জাবের পাটিয়ালার পাসিয়ানা খানার নাবা রোডের বাসিন্দা। অমরদীপ ও অমিতকুমারের সঙ্গে রয়েছেন আশু সিংহ নামে এক যুবকও। পুলিশ অমিত ও আশুকে জেরার জন্য আটক করে ইংরেজবাজার থানায় নিয়ে গিয়েছে। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পঞ্জাব পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। দুইজনকে জিঞ্জাসাবাদও করা হচ্ছে।’’

পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে, ওই তিন যুবক বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ মালদহে আসেন। ভোরে তাঁরা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একটি হোটেল ভাড়া নেন। এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ অমরদীপ এবং অমিত হোটেল থেকে বাইরে বের হন। আশু ওই এলাকাতেই ছিলেন। তাঁদের দাবি, ইংরেজবাজার শহরের একটি এটিএম থেকে লক্ষাধিক টাকা তোলেন তাঁরা। সেই সময় পেছন দিক থেকে কয়েক জন তাঁদের অচৈতন্য করে দেয়। তারপরে এদিন দুপুর ২টা নাগাদ কালিয়াচকের মোথাবাড়ি ফাঁড়ির শ্রীপুর মাঠে তাঁদের হুঁশ ফেরে। তখন তাঁরা দেখেন চার পাঁচ জন যুবক দাঁড়িয়ে রয়েছে। পালানোর চেষ্টা করলে তাঁদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পরে অমরদীপকে গুলি করা হয়। তাঁর কোমরের নীচে ডান দিকে গুলি লাগে। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন অমিতকুমারও। গুলির শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গেলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।

পরে পুলিশ গিয়ে ওই দু’জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। মেডিক্যাল কলেজে অস্ত্রোপচার করে অমরদীপের গুলি বের করা হয়। আর পুলিশ অমিতকে জেরা করে হোটেল থেকে আশুকেও আটক করে।

পুলিশের জেরায় তাঁরা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন, ট্রেনে করে গুয়াহাটি যাচ্ছিলেন তাঁরা। গুয়াহাটিতে বৃষ্টি হচ্ছে শুনে মালদহে নেমে যান। মালদহে নেমে একটি হোটেল ভাড়া নেন। কিন্তু হোটেলের নথিতে তাঁরা লিখেছেন, মালদহে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। কিন্তু সেই বন্ধু কারা বা কেনই বা তাঁরা এত টাকা তুললেন, তা পরিষ্কার নয়। এমনকী, ট্রেনের কোন টিকিটও দেখাতে পারেননি। এ ছাড়া তাঁদেরকে কেন অপহরণ করা হল, তা নিয়েও ধোঁয়াশায় রয়েছে পুলিশ। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, এই ঘটনার পেছনে মাদক চক্র কিংবা জালনোটের ঘটনা থাকতে পারে। তারই লেনদেনের জেরে এদিনের এই ঘটনা বলে অনুমান পুলিশের। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shot Fire Punjab youth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE