E-Paper

কিছুই জানতেন না, মন্তব্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের

সম্প্রতি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাপাতালে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর পর অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দাবি মতো টাকা দিতে পারেনি ক্রান্তির বাসিন্দা ওই পরিবার।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ০৯:০০
শিশুর দেহ নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে কালিয়াগঞ্জ থেকে মোস্তাফানগরের উদ্দেশে রওনা। ছবি: বিকাশ সাহা

শিশুর দেহ নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে কালিয়াগঞ্জ থেকে মোস্তাফানগরের উদ্দেশে রওনা। ছবি: বিকাশ সাহা

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে গাড়ির ব্যবস্থা না হওয়ায় মৃত সন্তানকে ব্যাগে ভরে বাসে বাড়ি পৌঁছনোর ঘটনায় হইচই পড়েছে। কেন সরকারি তরফে হাসপাতাল থেকে সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া গেল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেই বা কী ভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, তা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। মৃত শিশুর বয়স পাঁচ মাসের কিছু বেশি। তার বাবা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিকের দাবি, তিনি কর্তৃপক্ষকে জানালেও তাঁরা গুরুত্ব দেননি। মেডিক্যালের ওয়ার্ড লাগোয়া ক্যাম্পাসে থাকা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স বুথে গিয়ে রাতেই গাড়ি ভাড়া করতে যান। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া ৮ হাজার টাকা দাবি করা হয়। ওই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর ছিল না।

হাসপাতাল সুপারের দাবি, ‘‘এ ক্ষেত্রে কেউ কিছু জানায়নি। ওয়ার্ড মাস্টর অফিস, রোগী সহায়তা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। সেখানে সহকারি সুপারদের নম্বর দেওয়া থাকে। তাঁদের জানালেই হত।’’

সম্প্রতি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাপাতালে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর পর অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দাবি মতো টাকা দিতে পারেনি ক্রান্তির বাসিন্দা ওই পরিবার। স্বামী ও ছেলে বৃদ্ধার মৃতদেহ কাঁধে তুলে হাঁটা দিয়েছিলেন। তা নিয়ে হইচই পড়ে যায়। মৃত্যুর পর দেহ ছাড়ার সময় পরিবার কী ভাবে নিয়ে যাবে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দেহ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন। কিন্তু তার পরেও যে কাজ হয়নি তা স্পষ্ট। অথচ, সম্প্রতি রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে ঠিক হয়, মৃতদেহ নেওয়ার গাড়ির ব্যাবস্থা করা হবে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্য নেওয়া হবে।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স বুথ রয়েছে শুশ্রুতনগর সোস্যাল অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার। তাদের সম্পাদক পাপ্পু ঘোষ বলেন, ‘‘ওই পরিবারটি মূলত নিখরচায় সরকারি গাড়ি চাইছিল। আমাদের কেউ তাকে ৮ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া চায়নি। এখন এসব নানা

কথা বলা হচ্ছে।’’ হাসপাতাল চত্বরে থাকা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের উপর কর্তৃপক্ষের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি বুঝে অনেক ক্ষেত্রেই চালক মাত্রাতিরিক্ত দাম হাঁকেন। সংগঠনের দাবি, কিলোমিটার পিছু ২৫ টাকা হিসাবে ভাড়া চাওয়া হয়। সেই মতো কালিয়াগঞ্জ ২০০ কিমির মতো।

পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া হয়। সেই মতো পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা হয়। অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিয়ে যেতে বললে কর্তৃপক্ষ ভাড়া মিটিয়ে দেন। রোগীর পরিবার নিখরচায় পরিষেবা পায়। এ ক্ষেত্রে সে সব কিছু বলা হয়নি।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘মৃতদেহ বহনের কোনও গাড়ি মেডিক্যালে নেই। রোগীর পরিবার নিজেরাই ব্যাবস্থা করে থাকে। তবে কারও সামর্থ্য নেই জানালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মানবিক কারণে তা দেখে থাকে। এ ক্ষেত্রে কেউ কিছু জানায়নি।’’

মৃত শিশুর বাবার দাবি, রাতে গাড়ি নিয়ে সমস্যার কথা জানাতে সুপারের অফিস খোঁজ করলে কর্মীরা একটি ঘর দেখিয়ে দেন। সেখানে গেলে মৃত্যুর শংসাপত্র

দেওয়া হয়। সরকারি ব্যবস্থায় গাড়ি চাইলে জানানো হয় পরিবারকেই ভাড়া করে ব্যবস্থা করতে হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Siliguri North Bengal Medical College

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy