বিতর্ক: কোফাম-এর সেই জমি। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সেন্টার অব ফ্লোরিকালচার অ্যান্ড এগ্রিবিজ়নেস ম্যানেজমেন্ট’ (কোফাম)-এর জায়গা ‘পিপিপি’ মডেলে একটি বেসরকারি সংস্থাকে ব্যবহার ও তাদের কাজের সুযোগ করে দিতে চলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি হস্তান্তরের চেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে। আজ, শুক্রবার শিক্ষক-কর্মী-প্রাক্তনী, পড়ুয়াদের তরফে গঠিত ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বাঁচাও কমিটি’র ডাকে ক্যাম্পাসে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে দিনভর মাইকে প্রচার চালানো হয়েছে লাগোয়া এলাকায়। তার মধ্যেই ‘কোফাম’-কে ঘিরে ওই পরিকল্পনার সিদ্ধান্ত আগুনে ঘি ঢালতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও ‘কোফাম’-এর বিষয়টি নিয়ে কোনও জমি হস্তান্তর করা হবে না বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন।
উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘পিপিপি মডেলে কোফাম-কে ঘিরে একটি কাজের পরিকল্পনা রয়েছে। জমির প্রসঙ্গে এখানে কোনও কিছু নেই। সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে গবেষণা এবং সার তৈরির কাজ করবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।’’ তবে কোনও রকম ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি কোনও বেসরকারি সংস্থাকে হস্তান্তরের চেষ্টা হলে শিক্ষক সমিতির তরফে তাঁরা প্রতিরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অর্ধেন্দু মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘কোফামের বিষয়টিও আমরা শুনছি। বিষয়গুলো দেখা হবে। খোঁজখবর নিচ্ছি।’’
‘পিপিপি’ মডেলে ঠিক কী প্রকল্প হচ্ছে ‘কোফাম’-এর জায়গায়? বায়োটেকনোলজি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ইকোভূমি বায়োএগ্রি কনসেপ্টস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে কলকাতার একটি সংস্থার সঙ্গে ‘মউ’ স্বাক্ষর হবে। তাতে ওই সংস্থার সঙ্গে মিলে জৈব সার তৈরির বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান অনুপ কুমার বলেন, ‘‘পাঁচ বছরের জন্য ওই সংস্থার সঙ্গে চুক্তির কথা রয়েছে। প্রথম বছর দেখা হবে, তারা কী ধরনের কাজ করছে। কাজ ঠিক মতো হলে, উৎপাদিত জৈব সার চাষিদের কাজে লাগলে বাণিজ্যিক ভাবে তার উৎপাদন সম্ভব হতে পারে। ওই সংস্থা সেটা করতে পারবে। বা কোফামে সে উৎপাদনের ইউনিট করার কথা ভাবা যেতে পারে।’’ শিক্ষকদের একাংশের দাবি, গবেষণামূলক কাজে আপত্তি নেই। তবে ক্যাম্পাসের জায়গা কোনও বাণিজ্যিক সংস্থা ব্যবহার করে মুনাফা করলে এবং তা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় লাভবান না হলে, ওই জমি কোনও বিশেষ সংস্থাকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে কেন? কর্তৃপক্ষের তরফে তা পরিষ্কার করা দরকার।
আজ, শুক্রবার কর্মসমিতির বৈঠকে ক্যাম্পাসের পাঁচ একর জায়গায় হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট করার জন্য ‘ট্রান্সফার ফর ইউজ়ার রাইট’-এর প্রস্তাব পাশ করাতে পেশ করার কথা রয়েছে। ওই জমি কোনও রকম হস্তান্তরের বিরুদ্ধে জমায়েত করে বিক্ষোভ-আন্দোলন এবং উপাচার্যের কাছে মঞ্চের তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এ দিন সন্ধ্যায় এক দল শিক্ষক উপাচার্য়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। উপাচার্য তাঁদের জানান, কিছু লোক ভুল বোঝাচ্ছে। ওই প্রতিষ্ঠান গড়তে জমি ব্যবহারের অধিকার দেওয়া হচ্ছে। কাউকে জমি হস্তান্তর করা হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy