উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন মেটেলি কালীবাড়ির পুজো। নিজস্ব চিত্র।
ডুয়ার্স তথা উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন মেটেলি কালীবাড়ির পুজো। এক সময় ভুটানিরা এই কালীপুজো করতেন। অদ্ভুত দর্শন এই কালী মূর্তির মধ্যে হিন্দু এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির ছোঁয়া রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো এই পুজোয় এ বার বলি না দেওয়ার নোটিস ঝোলানো হয়েছে।
ঠিক কবে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল, নির্দিষ্ট করে জানা যায় না। তবে প্রায় ১৫০ বছর পুরনো তারিখ খোদাই করা একটি পাকা বেদি পাওয়া গিয়েছে মাটির নীচ থেকে। ১৯৬৮ সালে পুরানো মন্দিরের উপর একটি বড় গাছ পড়ে যায়। মন্দিরের কিছুটা অংশ ভেঙে গেলে তা নতুন করে তৈরির কাজ শুরু হয়। সেই সময় মাটির নীচ থেকে প্রদীপ, পাকা বেদি-সহ আরও নানা পুরনো সামগ্রী পাওয়া যায়। সেই বেদিতে ১২৭৮ বঙ্গাব্দের উল্লেখ ছিল। যেটিকে এই কালীমন্দির প্রতিষ্ঠার সাল ধরা হয়। ফলে সেই হিসেবে এই বছর ১৪৯তম বর্ষে পা দিল মেটেলি কালীবাড়ির পুজো। মন্দিরে ১৩৩০ সাল খোদাই করা একটি খাঁড়াও পাওয়া গিয়েছে। ওই খাঁড়াই প্রথমে বলির জন্য ব্যবহার হত বলে অনুমান। পরে ১৯৮৩ সালে মন্দির চত্বরে একটি সিমেন্টের পিলার পাওয়া যায়। তবে সেটিকে আর মাটি থেকে তোলার চষ্টা করা হয়নি বরং প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
কষ্টি পাথরের তৈরি এই কালী মূর্তিও একটু অন্য রকম দেখতে। চোখ দুটো বড় বড় টানা টানা। মেটেলি কালীবাড়ি সম্পাদক বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, “প্রতিমার গঠন দেখে মনে হয় ওই প্রতিমার মধ্যে হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্মের মিশ্রণ রয়েছে। প্রায় ৩২ কাঠা জমির এই কালীবাড়ির অজানা ইতিহাস নিয়ে গবেষণায় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবকে অনুরোধ করেছি। সরকারি ভাবে মেটেলি কালিবাড়িকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবিও করা হয়েছে।”
আগে প্রতিবছর এই পুজোয় বলি হলেও এ বার মন্দির কর্তৃপক্ষ গেটে বলি বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছে। পুজোর সময় ছাড়াও সারা বছর মেটেলি কালীবাড়িতে দেশ বিদেশের বহু পর্যটক পুজো দিতে আসেন। তবে এ বছর কোভিড পরিস্থিতির জন্য বড় করে পুজো করা হবে না। সরকারি সাস্থ্যবিধি মেনেই হবে পুজো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy