নদী-কেন্দ্রিক এলাকায় ‘নদী বন্ধন’ নামে নতুন প্রকল্প ঘোষণা করা হল রাজ্য বাজেটে। এই প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ভাঙন বিধ্বস্ত মালদহ জেলায় এই প্রকল্পে কত টাকা খরচ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুর্গত থেকে শুরু করে বিরোধীরাও। তাঁদের বক্তব্য, ফি বছর মালদহে গঙ্গা, ফুলহার, মহানন্দা-সহ একাধিক নদীতে যে হারে ভাঙন হয়, তা ঠেকাতেই ওই ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে যাবে।
মালদহ জেলায় নদী ভাঙন জ্বলন্ত সমস্যা। জেলার প্রায় ৮০ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গা নদীর ভাঙনে ফি বছর জেরবার হচ্ছে গঙ্গা পারের বিস্তীর্ণ এলাকা। এ বারে ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছেন শতাধিক বাসিন্দা। ভাঙনের আগ্রাসনে নদীপারের বহু বাসিন্দাই নিজেরা ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়েছেন। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকে দু’দফায় বন্যা হয়েছে মানিকচকের ভূতনিতে। জেলার ৪৮ কিলোমিটার এলাকায় প্রবাহিত ফুলহার নদীরও ভাঙন রয়েছে। এ ছাড়া মহানন্দা, টাঙন ও পুর্নভবার মতো নদীগুলিতে ভাঙন রয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মরসুমে দফতরের মালদহ ও মহানন্দা ডিভিশন মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ভাঙন প্রতিরোধের কাজে খরচ করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও ভাঙন ঠেকানো যায়নি বলে অভিযোগ।
এ দিন রাজ্য বাজেটে ‘নদী বন্ধন’ প্রকল্পে বরাদ্দ ২০০ কোটি টাকার মধ্যে কত টাকা মালদহ জেলার জন্য খরচ হবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে? রতুয়া ১ ব্লকের মহানন্দাটোলা পঞ্চায়েতের ভাঙন-দুর্গত শ্রীকান্তটোলার বাসিন্দা ডুবি মণ্ডল, সীমা মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘গত বর্ষায় ভাঙনে গঙ্গা ভিটের দোরগোড়ায় চলে আসায় আতঙ্কে পাকা বাড়ি ভেঙে নিতে হয়েছে। এখন অস্থায়ী আস্তানায় দিন কাটছে। এবার যদি ভাঙন প্রতিরোধের স্থায়ী কাজ না হয় তবে ভিটেটুকুও চলে যাবে নদীগর্ভে।’’ দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরী বলেন, ‘‘আমার লোকসভা মধ্যে গঙ্গা ও পদ্মার ভাঙন প্রতিরোধেই ২০০ কোটি টাকা চলে যাবে। ফলে ওই বরাদ্দে কী কাজ হবে?" বিজেপির মালদহ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি ঘোষ বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যের নদী ভাঙনের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে মাত্র। তার মধ্যে থেকে ভাঙন বিধ্বস্ত মালদহের জন্য কী কাজ হবে?’’ সেচ প্রতিমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার তার সীমিত ক্ষমতায় নদী বন্ধন প্রকল্পে ভাঙন রোধে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার তো বরাদ্দই করেনি। ফলে বিরোধীদের এই সব প্রশ্ন পুরোপুুরি অবান্তর।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)