E-Paper

শক্তিশালী ব্যবসায়িক লেনদেনও দু’দেশের সম্পর্ক মজবুত করে

পৃথিবীর একাধিক জায়গায় নজির রয়েছে যে পাশাপাশি দু’টি দেশ ব্যবসার মাধ্যমেই নিজেদের সম্পর্ক ঠিক রেখেছে। ব্যবসা বেড়েছে বলে দুই দেশের আর্থিক উন্নতিও হয়েছে।

ধীরাজ অধিকারী

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:২৩
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

এ ভাবে আর কত দিন চলবে?

বিদ্বেষ-বিষের প্রভাব পড়ছে দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কে। ব্যবসা ক্রমাগত ক্ষীণ হয়ে আসছে দুই দেশের মধ্যে। তাতে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগে কিন্তু ব্যবসায়ীরাই। হিলি সীমান্তের এ পার–ও পারে এই অনিশ্চয়তার জন্য প্রচুর ক্ষতির মুখেও তাঁদের পড়তে হচ্ছে। অথচ একটা শক্তিশালী ব্যবসায়িক লেনদেনই পারে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে।

তার দিকে কি আদৌ মন দেওয়া হচ্ছে, ভাবছেন কেউ?

শুধু হিলি কেন, মালদহের মহদীপুর, শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি, কোচবিহারের চ্যাংরাবান্ধার মতো বন্দর দিয়েও বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা চলে। অথচ, বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি প্রতিটি সীমান্ত-ব্যবসার উপরে কালো মেঘের ঘনঘটা তৈরি করেছে। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে, সব কিছু ঠিকঠাকই চলছে। কিন্তু বাংলাদেশে অস্থিরতায় ব্যাপক ক্ষতি এবং লুটপাটের মুখে পড়তে হয়েছিল অনেক ব্যবসায়ীকেই। তার পরোক্ষ প্রভাব কিন্তু এ পারের সীমান্ত ব্যবসাতেও পড়েছিল। হঠাৎ করে চুক্তি বাতিল হতে শুরু করেছিল ও পার থেকে। কয়েকশো ট্রাকের ভিড় জমেছিল সীমান্তে। চালকদের প্রাণ হাতে করে ফিরতে হয়েছিল। আগের চেয়ে একেই সীমান্ত ব্যবসার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয়-বিধি অনেকটাই কড়া হয়েছে। তার পরে এ রকম পরিস্থিতিতে ব্যবসা বন্ধ হওয়া এবং কর্মসংস্থান হারানোর উদ্বেগ ক্রমাগত বাড়ছে। সীমান্ত ব্যবসার উপরে উত্তরবঙ্গে কম করেও হলেও টিকে রয়েছে অন্তত ৪০ হাজার পরিবার।

পৃথিবীর একাধিক জায়গায় নজির রয়েছে যে পাশাপাশি দু’টি দেশ ব্যবসার মাধ্যমেই নিজেদের সম্পর্ক ঠিক রেখেছে। ব্যবসা বেড়েছে বলে দুই দেশের আর্থিক উন্নতিও হয়েছে। এক দিকে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান, অন্য দিকে, সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের চেয়েও ব্যবসায়িক সম্পর্ক অনেক বেশি মজবুত। ১৯৭১ সালের পর থেকে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি বিনিময়ের ভিতের উপর ব্যবসার সেই সমীকরণ দীর্ঘদিন দুই দেশের মধ্যেও বজায় ছিল।

ভারত বাংলাদেশের কাছে দ্বিতীয় আমদানিকারী দেশ। মোট আমদানির প্রায় ১৮% বাংলাদেশ এ দেশ থেকেই আমদানি করে। চিন থেকে সস্তায় যন্ত্রাংশ এলেও রোজকার আনাজ, আলু, পেঁয়াজ, ডাল, চিনি, ভুষি, ভুট্টা, কাঁচালঙ্কার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ভারত থেকেই বাংলাদেশের নেওয়া লাভজনক এবং বাস্তবসম্মত। উত্তরবঙ্গের সীমান্তগুলি দিয়ে দুই দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অঙ্ক কয়েক হাজার কোটি টাকার।

তাই দুই দেশের জননেতা, কয়েক জন নাগরিক উল্টোপাল্টা মন্তব্য করলে তা সার্বিক মনোভাবের উপরে যেন প্রভাব না ফেলে, সে দিকে নজর দেওয়া সবার দায়িত্ব। বাংলাদেশে একটা স্থায়ী সরকার খুব জরুরি। যাতে বিবেচনাহীন, বিদ্বেষী মানুষের কথা উড়িয়ে সম্পর্ক আবার ভাল হয়, ব্যবসাও বাঁচে। বাকিটা সময় ঠিক করে দেবে।

হিলি রফতানি ব্যবসায়ী সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

North Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy