Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খেজুরের গুড়ে পার্বণের ব্যস্ততা

আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের সীমানায় কাশিয়া বাড়ি গ্রামের চারিদিকে খেজুরের গাছ। কার্তিক মাস থেকে এলাকায় শুরু হয়েছে খেজুর গুড় তৈরির ব্যস্ততা। এলাকার বাসিন্দারা তো বটেই, অন্য জেলা থেকেও গুড় তৈরির কারিগর এসেছেন গ্রামে।

গুড়ের পসরা কাশিয়াবাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

গুড়ের পসরা কাশিয়াবাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

এক দিকে খেত থেকে সোনালি ফসল উঠতে শুরু করেছে। অন্য দিকে বাতাসে খেজুরের গুড়ের মিষ্টি গন্ধ জানান দিচ্ছে পিঠেপুলির দিন আসছে। তাতেই ব্যস্ততা বেড়েছে পাতলাখাওয়া পঞ্চায়েত এলাকার কাশিয়াবাড়ি গ্রামে। ভোর হতেই বাসিন্দারা সংগ্রহ করছেন খেজুর গাছের রস। বাড়ির গৃহিনী থেকে খুদেরাও হাত লাগাচ্ছে পিঠে-পুলি, পায়েস, রসগোল্লা, সন্দেশে মেশানোর জন্য খেজুরের গুড় তৈরিতে।

আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের সীমানায় কাশিয়া বাড়ি গ্রামের চারিদিকে খেজুরের গাছ। কার্তিক মাস থেকে এলাকায় শুরু হয়েছে খেজুর গুড় তৈরির ব্যস্ততা। এলাকার বাসিন্দারা তো বটেই, অন্য জেলা থেকেও গুড় তৈরির কারিগর এসেছেন গ্রামে।

এলাকার বাসিন্দা গোপাল সরকার জানান, নিজের সামান্য জমি রয়েছে, তাতে ধান চাষ করে সারা বছর সংসার চলে না।

অন্যের জমিতে থাকা খেজুর গাছ কয়েক মাসের জন্য লিজে নেন তিনি। সেখান থেকে নিজেই রস সংগ্রহ করেন। বাড়িতে বৌ ছেলে মেয়ে মিলে বড় কড়াইয়ে পাক দিয়ে তৈরি হয় খেজুরের গুড়। আলিপুরদুয়ার থেকে মহাজনেরা এসে কিনে নিয়ে যান সেই গুড়।

নাম প্রকাশে এক বাসিন্দা জানান, এলাকার প্রায় কুড়িটি পরিবার এই মরসুমে তৈরি করেন খেজুরের গুড়। সারা গ্রাম গন্ধে মম করতে থাকে। খেজুরের গুড় তৈরির কারিগর লক্ষ্মী সরকার, অনিতা সরকাররা জানান, স্বামীরা ভোর বেলায় টিনের ড্রামে করে নিয়ে আসেন খেজুরের রস। বাড়িতে নিজেদের হাতে তৈরি বড় বড় উনুনে কড়াইয়ে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগাতার পাক দিয়ে তৈরি করেন সুস্বাদু গুড়। ছোট ছোট মাটির পাত্রে তরল গুড় ঢেল তা ঠান্ডা করার কয়ে মিনিট পরে তা জমে যায়।

গোপাল সরকার জানান, এলাকায় বিকাশ সরকার মহানন্দ মণ্ডল সহ বহু বাসিন্দা গুড় তৈরির সঙ্গে যুক্ত। তবে নিজেদের পুঁজি বেশি না থাকায় এক একজন মাত্র চল্লিশ পঞ্চাশটি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে পারেন। ঋণের ব্যবস্থা হলে বড় মাপে গুড় তৈরি করে সরাসরি বাজারে ক্রেতাদের কাছে পাঠানো সম্ভব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE