Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গণ ধোলাই থামবে কি নয়া আইনে

শুক্রবার বিধানসভায় গণপিটুনির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিল পাশ হয়েছে। ওই দিনই জলপাইগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে চুরির অভিযোগে ধৃতকে গণপিটুনি দেয় জনতা।

পিটুনি: গণপিটুনির রোগ ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি শহরেও। ফাইল চিত্র

পিটুনি: গণপিটুনির রোগ ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি শহরেও। ফাইল চিত্র

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৫১
Share: Save:

লোকসভা ভোটের পরের কয়েক মাসে জেলায় অন্তত ১০টি গণপিটুনির অভিযোগ উঠেছে। নাবালক থেকে ভবঘুরে, জনরোষের শিকার হতে হয়েছে অনেককে। গণপিটুনি রুখতে নতুন আইনে পরিস্থিতি কতটা বদলাবে তার অপেক্ষায় রয়েছে জলপাইগুড়ি।

শুক্রবার বিধানসভায় গণপিটুনির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিল পাশ হয়েছে। ওই দিনই জলপাইগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে চুরির অভিযোগে ধৃতকে গণপিটুনি দেয় জনতা। গত দু মাসে ডুয়ার্সের চা বলয় নাগরাটাকা, মালবাজার থেকে জেলার কৃষি বলয় রাজগঞ্জ, এমনকি জলপাইগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকাতেও একাধিক গণপিটুনির অভিযোগ উঠেছে। তাতে জড়িয়েছে রাজনীতিও। তৃণমূলের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের পর থেকে বিজেপি জেলা জুড়ে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে। নানা গুজব ছড়িয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করছে বিজেপির নেতারা বলে তৃণমূলের অভিযোগ। বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে সব দলের নেতারাই প্রকাশ্যে দাবি করেছেন, গণপিটুনি বন্ধ করতে হবে।

নাগরাকাটা, জলপাইগুড়ি সব ক’টি গণপিটুনির অভিযোগেই পুলিশ দাঙ্গার মামলা দিয়েছে বলে খবর। গত বছর ছেলেরা সন্দেহে ধৃত দুই যুবককে জনতার হাতে দেওয়ার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ক্রান্তি। পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটে। সেই মামলাতেও পুলিশ দাঙ্গার অভিযোগ দায়ের করেছিল। পুলিশ কর্তাদের একাংশের দাবি, দাঙ্গার ধারায় মামলা দিয়ে খুব একটা সুরাহা হয়নি। অভিযুক্তরা অনেকক্ষেত্রেই সহজে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। এবার মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির ভয়ে গণপিটুনি কমতে পারে বলে আশায় রয়েছে তাঁরা জলপাইগুড়ি জেলার সরকারি আইনজীবী তথা বার কাউন্সিলর সদস্য গৌতম দাসের কথায়, “নিঃসন্দেহে নতুন আইন বৈপ্লবিক। এই আইনের সম্পর্কে সচেতনতা বেশি করে ছড়াতে হবে।” একই কথা বলছে পুলিশও। গণপিটুনির সাজা যে মৃত্যুও হতে পারে সে বিষয়টি সকলকে জানাতে হবে। তাহলেই আইন হাতে তুলে নেওয়ার আগে যে কেউ ভয় পাবে বলে দাবি।

যে চা বাগানে গণপিটুনির অভিযোগ উঠেছে সেখানকার বাসিন্দা সুজন লামা বলেন, “ডুয়ার্সের এলাকা অনেকটাই নির্জন। এখানে সহজেই ছেলেধরা বা অন্য গুজবে আতঙ্ক চেপে বসে। গণপিটুনি আটকাতে গেলে নতুন আইনের কথা জানাতে প্রতিটি চা বাগানে যেতে হবে। গণপিটুনির সাজা কতটা কঠিন, তা বোঝাতে হবে।“ জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া করলা জয়পুর চা বাগানে এক ভবঘুরেকে ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়েছিল বাসিন্দারা। এলাকার শিক্ষক পুণ্যব্রত দত্তের কথায়, “এখনও ছেলেধরা আতঙ্ক রয়েছে। অনে কসময়ে গণপিটুনি হলেও প্রশাসন সক্রিয় হয় না, তাতে এই প্রবণতা বাড়ে।” একই মত মালবাজারের আইনজীবী রাজকুমার গুপ্তের। তাঁর মন্তব্য, “আইন হয়েছে, ভাল কথা। চা বলয়ে গিয়ে বিস্তারিত তথ্যও জানাতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mob Lynching New Act West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE