—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের একাধিক উন্নয়ন বোর্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিতে শুরু করেছে। বিশেষ করে, সম্প্রতি নবান্নের সভাঘরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, রাজ্যের বিভিন্ন বোর্ডের প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়েছে। জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বোর্ডের কাজকর্ম দেখভাল করতে পারবে। এর পরেই পাহাড়ের ১৬টি জনজাতি বোর্ডের কী হবে, তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা চলছে। রাজ্য প্রশাসনের তরফেও খোঁজখবর চলছে।
জিটিএ প্রধান অনীত থাপা এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। জিটিএ-র এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, পাহাড়ের বোর্ডের হালহকিকত কলকাতায় জানানো রয়েছে। কিছু বোর্ডের কাজকর্ম নিয়ে গত দু’বছর ধরে প্রশ্ন উঠেছে। তহবিল সংক্রান্ত এবং বোর্ডের একাংশ চেয়ারম্যানের কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। এখন পাহাড়ে জেলা প্রশাসন ছাড়াও জিটিএ, দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা রয়েছে। তাই নতুন করে বোর্ডের কাজ করার নেই বলেও অনেকে মনে করছেন।
২০১৩ সালে রাজ্য সরকার প্রথম পাহাড়ে মায়াল লায়াং উন্নয়ন বোর্ড তৈরি হয়। এর পরে ২০১৮ সাল অবধি লেপচা, গুরুং, সংখ্যালঘু মিলিয়ে মোট ১৬টি বোর্ড তৈরি হয়েছে। গত ১১ বছর শতাধিক কোটি টাকা বোর্ডের উন্নয়নে দেওয়া হয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ, আদিবাসী উন্নয়ন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন এবং সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের অধীনে এক-একটি বোর্ড রয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পরে, পাহাড়ে কাজের জন্য বোর্ডগুলি তৈরি করা হয়। আদতে সেগুলি পাহাড়ে বিভেদের রাজনীতি করার জন্য হয়েছে বলে বারবার রাজু বিস্তার মতো বিজেপি নেতা তথা সাংসদেরা অভিযোগ করেছেন। তবে ২০১৭ সালে পাহাড়ের আন্দোলনের পরে, বোর্ডের ভূমিকা নিয়ে সরকার ‘সন্তুষ্ট’ ছিল না।
২০১৯ সালে লোকসভা, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটেও বোর্ডগুলির ভূমিকা নিয়ে শাসক দলের অন্দরে প্রশ্ন ওঠে। শাসক দলের নেতাদের অনেকের অভিযোগ, বোর্ডগুলিতে আবাসন, হোম-স্টে, ছোট রাস্তার কাজের জন্য বলা হয়েছিল। তা ‘ঠিকঠাক’ হয়নি। উল্টে, টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে। বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্তদের একাংশের জীবনধারাও পাল্টেছে। গাড়ি, বাড়ি, রিসর্ট, হোম-স্টে বানিয়ে অনেকে ফুলফেঁপে উঠেছেন বলে অভিযোগ।
গত বিধানসভার পরে, ২০২২ সালে কলকাতায় বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্তদের ডেকে রাজ্য সরকার সতর্কও করেছিল। পাহাড়ের শাসক দলের কয়েক জন নেতার বক্তব্য, বোর্ডের লোকজন সরকারের উন্নয়নের প্রচার করা তো দূরে থাক, মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। ভোটের ফলাফলে তার প্রতিফলনও দেখা যাচ্ছে। তা হলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বোর্ডগুলি রাখার যুক্তি নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy