জরুরি বিভাগের বাইরে বসে মোবাইল ফোন দেখছেন রায়গঞ্জ মেডিক্যালে নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার ও মেডিক্যালে এজেন্সি নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীরা। রবিবার গভীর রাতে।
দৃশ্য এক: রাত প্রায় ১২টা, সুনসান জরুরি বিভাগের সামনের এলাকা। রোগীদের ওয়ার্ডে ভর্তির টিকিট দেওয়ার কাজে নিযুক্ত এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী লোহার ঘেরাটোপ দেওয়া কাউন্টারে বসে মোবাইল দেখছেন। ভিতর থেকে গ্রিলের দরজায় তালা মারা। বাইরে একাধিক নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও কেনও ঘরে তালা মেরে বসে? জবাব দেননি তিনি। তবে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, “আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার পরে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা রাতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তাই তিনি স্বাস্থ্যকর্মী ভিতর থেকে তালা মেরে কাজ করছেন।”
দৃশ্য দুই: রাত প্রায় একটা। কয়েক জন মহিলা চিকিৎসক ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে দ্রুতগতিতে হস্টেলের দিকে রওনা হলেন। জরুরি বিভাগ থেকে হস্টেলের দূরত্ব প্রায় দু’শো মিটার। কেন জোরে হাঁটছেন? ওই মহিলা চিকিৎসকের জবাব, “দেখছেন তো পর্যাপ্ত আলোর অভাবে রাস্তা অন্ধকার। দুষ্কৃতীরা তো আমাদের উপরে হামলা করতেই পারে।”
রবিবার গভীর রাতে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে এমনই নানা ছবি দেখা গিয়েছে। সন্ধ্যার পরে রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর অভাবে অন্ধকার নেমে আসে মেডিক্যাল চত্বরে। ওই রাস্তায় নেই নজর-ক্যামেরাও। ওই রাতে জরুরি বিভাগে কোনও মহিলা চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন না। তবে সেখানে নার্স ও মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা দায়িত্বে ছিলেন। রাত ১২টা নাগাদ এক রোগীর চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে ওই রোগীর পরিবারের লোকেদের বচসাও বেধে যায়। সেই সময়ে জরুরি বিভাগের বাইরে মেডিক্যালে এজেন্সি নিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীরা ও এক জন সিভিক পুলিশ গল্পে ও মোবাইলে ব্যস্ত ছিলেন। ওই রাতে মেডিক্যালের মহিলা সার্জিক্যাল এবং মেডিসিন ওয়ার্ডের ভিতরে এবং বাইরে কোনও নিরাপত্তারক্ষী নজরে পড়েনি বলেও রোগীদের পরিবারের অভিযোগ।
এই বিষয়ে সহকারী সুপার বিপ্লব হালদারের দাবি, মেডিক্যাল চত্বরের রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো এবং নজর-ক্যামেরার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন। পাশাপাশি মেডিক্যালের নিরাপত্তারক্ষীদের রাত সতর্ক থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার এই দিন এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “মেডিক্যালের নিরাপত্তা নিয়ে কিছু দিন আগে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সর্বত্র পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy