Advertisement
E-Paper

১২ হাজার দিলেই ‘বার্তা’, ছাড়ে ট্রাক

দুই রাজ্যে চলাচলকারী ট্রাক চালকদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, অসমে বাংলা-সীমান্তে কয়লা বোঝাই ট্রাক-প্রতি ১২ হাজার টাকা দিলে তবেই এদিকে আসার ‘অনুমতি’ পায়।

রাজু সাহা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সন্ধে নামতেই অসম সীমানার বারবিশা সংলগ্ন জাতীয় সড়কের ছবিটাই পাল্টে যায়। সীমানা পেরিয়ে এ রাজ্যে ঢুকতে থাকে ত্রিপলে ঢাকা সারি সারি ট্রাক। রাত বাড়ে। ট্রাকের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। অভিযোগ, ওইসব ট্রাকে বোঝাই থাকে কয়লা। উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে এ ভাবেই কোটি কোটি টাকার কয়লা পাচার হয়ে যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার-সহ বেশ কিছু রাজ্যে।

এই চোরাচালানের করিডর হিসেবে উত্তরবঙ্গকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে খোঁজ করতে গিয়ে এই পাচারের পিছনে রাজনৈতিক নেতা থেকে পুলিশের কর্তাদের একাংশের নাম উঠে এসেছে। এঁদেরই মদতে বছরভর মসৃণ ভাবে চলছে এই পাচারের কারবার। জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের এক কয়লা মাফিয়া এই পাচার চক্রের মূল পান্ডা। আর মদত দিচ্ছেন জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের কর্তাদের একাংশ।

দুই রাজ্যে চলাচলকারী ট্রাক চালকদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, অসমে বাংলা-সীমান্তে কয়লা বোঝাই ট্রাক-প্রতি ১২ হাজার টাকা দিলে তবেই এদিকে আসার ‘অনুমতি’ পায়। অসমে যেখানে কয়লা বোঝাই করা হয়, সেখানেই ‘নির্দিষ্ট’ জায়গায় ১২ হাজার টাকা দিতে হয়। তারপরই মেলে বিশেষ কোড বসানো কুপন।

পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, জলপাইগুড়ি পুলিশেরও লোক থাকে সেখানে। টাকা মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে জলপাইগুড়ির এক পুলিশকর্তার কাছে সংশ্লিষ্ট ট্রাকের নম্বর-সহ মেসেজ, অর্থাৎ সবুজ সঙ্কেত আসে। এরপর ট্রাকগুলি বাধা ছাড়াই কয়লা নিয়ে এদিকে চলে আসে। প্রতিদিন কয়লার গাড়ি থেকে আদায় হয় ছয় থেকে আট লক্ষ টাকা।

জলপাইগুড়ি এবং রাজগঞ্জে এজন্য বিশেষ ‘নাকা চেকিং’ রয়েছে। সেই চেকিং দেখলে মনে হবে, গাড়ির কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু আড়ালে ওই বিশেষ কোড বসানো কুপন দেখিয়ে ‘ছাড়পত্র’ পায় ট্রাকগুলো। এই রুটে কয়লা বোঝাই আইনি ট্রাকও যাতায়াত করে। অভিযোগ, পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হয় তাদেরও। কয়লা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চালকেরা বৈধ কাগজ দেখালেও সেগুলি ছিঁড়ে ফেলে টাকা চায় পুলিশ। না পেলে মিথ্যে মামলার হুমকি দেওয়া হয়।

পুলিশও অবশ্য সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, বেআইনি কয়লা পাচারের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চলে। সঠিক কাগজপত্র না থাকলে অথবা গাড়িতে অতিরিক্ত পণ্য থাকলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অথচ পুলিশেরই অন্য একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, অসম, নাগাল্যান্ড অরুণাচলপ্রদেশে বেশ কিছু খনি রয়েছে। সরকারি নীতি না মেনে সেই খনিগুলিতে কয়লা তোলা হয়। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই এ রাজ্যের উপর দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার কয়লা পাচার হয়ে যাচ্ছে।

Coal Smuggling Assam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy