Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
RSS

মন পেতে সংখ্যালঘুর ঘরে খোদ সঙ্ঘ

আর বিজেপি নয়, উত্তরবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোটারদের মন পেতে এবারে সক্রিয় হচ্ছে সঙ্ঘ পরিবার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অনির্বাণ রায় ও মেহেদি হেদায়েতুল্লা
জলপাইগুড়ি ও গোয়ালপোখর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৩৪
Share: Save:

আর বিজেপি নয়, উত্তরবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোটারদের মন পেতে এবারে সক্রিয় হচ্ছে সঙ্ঘ পরিবার। সঙ্ঘ সূত্রে বলা হচ্ছে, লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে আটটির মধ্যে সাতটি আসন জিতে নিলেও সংখ্যালঘু, মূলত মুসলিমদের মন পায়নি বিজেপি। যার ফলে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর ও মালদহের সংখ্যালঘু প্রধান এলাকায় অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে ছিল বিরোধীরা। বিধানসভা ভোটের নিরিখে এই ভোটব্যাঙ্ক ফারাক গড়ে দিতে পারে বলেই মনে করছেন সঙ্ঘ পরিবারের লোকজন।

বিজেপি সূত্রের খবর, বিজেপি নেতৃত্বকে আরএসএস জানিয়েছে, সংখ্যালঘুদের মন পাওয়ার বিষয়টি তাঁরাই ‘বুঝে নেবেন’। এই প্রক্রিয়াতেই জলপাইগুড়ির বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে শুরু করেছেন সঙ্ঘের প্রচারকরা। আবার উত্তর দিনাজপুরে আরএসএসের সংগঠনে মুসলিম যুবকদের সদস্য করা হচ্ছে।

বিজেপির বদলে কেন সঙ্ঘ নিজেই সংখ্যালঘু ভোটারদের কাছে টানতে ময়দানে নামছে? সঙ্ঘ সূত্রেই বলা হচ্ছে, তাদের গোঁড়া হিন্দুত্বই সংখ্যালঘু ভোটারদের কাছে টানতে প্রধান বাধা। সেই ভয় দূর করতে তাই বিজেপির মাধ্যমকে বেছে না নিয়ে সঙ্ঘ নিজেই সংখ্যালঘু ভোটারদের কাছে পৌঁছতে চাইছে, তাদের বোঝাতে চাইছে।

সঙ্ঘের এক কার্যকর্তার কথায়, “যাঁকে নিয়ে ভয়, তিনিই যদি আলোচনায় বসেন এবং বোঝাতে পারেন, ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই, তা হলে তার প্রভাব তো অন্যরকম হবেই।”

কী ভাবে এই কথা বোঝাবেন সঙ্ঘের কার্যকর্তারা? সঙ্ঘ সূত্রে বলা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় মুসলিম মঞ্চ নামে তাদের একটি মুসলিম শাখা সংগঠন আছে। উত্তর দিনাজপুরে এই সংগঠনের শাখা বিস্তার শুরু করেছে সঙ্ঘ। ওই জেলার ৯টি বিধানসভার মধ্যে ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, করণদিঘি ও ইটহার মুসলিম-প্রধান। সঙ্ঘের পাটিগণিতে স্পষ্ট, এই আসনগুলি পেতে গেলে মুসলিম ভোট লাগবেই। বিজেপি নেতৃত্ব ওই জেলার সংখ্যালঘু বুথগুলিতে সংখ্যালঘুদের সামনে রেখে কমিটি তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন। জেলার বেশ কিছু এলাকায় মুসলিম যুবকদের সদস্যপদ দিয়েছে সঙ্ঘ।

সঙ্ঘ থেকে উঠে আসা বিশ্বজিৎ লাহিড়ী এখন উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি। তাঁর কথায়, “সঙ্ঘ মুসলিম বিরোধী সংগঠন নয়। সঙ্ঘ রাষ্ট্রভাবনার আদর্শে মানুষ গড়ার কাজ করে। তবে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’

হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সভাতেও এক সুর। শুক্রবার করণদিঘিতে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সভায় বক্তারা স্পষ্ট বলেন, মঞ্চ মুসলিম বা খ্রিস্টান বিরোধী নয়। একই ভাবে এনআরসি, সিএএ নিয়ে প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে, ভারতের মুসলিমদের ভয়ের কিছু নেই।

তবে মাইক বেঁধে, লিফলেট ছড়িয়ে প্রচার করলে সব সময়ে ভোটারদের মনে দাগ কাটা যায় না বলেই মনে করেন সঙ্ঘ-প্রচারকরা। তাই জলপাইগুড়ির বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের সঙ্গে কথা শুরু করেছেন সঙ্ঘের কার্যকর্তারা। এই জেলাতেও মুসলিম ভোট না পেলে রাজগঞ্জ, ধূপগুড়ি, মালবাজার, নাগরাকাটা আসনে পদ্ম ফোটানো কঠিন হতে পারে।

সঙ্ঘের এই সক্রিয়তা নিয়ে এই জেলার তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “ভোটের জন্য বিজেপি যদি ছদ্মবেশ ধরে, তবু সংখ্যালঘু ভোটাররা আসল চেহারা ভুলবেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

RSS BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE