অস্থায়ী উপাচার্যের ব্যবহৃত গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে যোগ দিয়ে সিএম রবীন্দ্রন ক্যাম্পাসের বাংলোয় থাকছিলেন না। উপাচার্যের গাড়িও ব্যবহার করছিলেন না। তিনি কদমতলায় বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের গেস্ট হাউসে থাকতেন। ২২ অগস্টের পরে, নিয়োগপ্রাপ্ত অস্থায়ী উপাচার্যেরা বাড়তি সুযোগসুবিধা পাবেন না বলে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল। মাঝে বাইরে গিয়েছিলেন উপাচার্য রবীন্দ্রন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, গত ২৯ অক্টোবর থেকে তিনি উপাচার্য হিসাবে দফতরের গাড়ি চেয়ে পাঠান, এখন তা ব্যবহার করছেন এবং ক্যাম্পাসের বাংলোয় তাঁর থাকার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাংলো সংস্কারে প্রায় এক লক্ষ টাকার টেন্ডার ডাকা হয়েছে। সব মিলিয়ে অস্থায়ী উপাচার্য ‘বাড়তি’ সুবিধা নিচ্ছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গত ৫ অক্টোবর অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে যোগ দেন সিএম রবীন্দ্রন। সে থেকে তিনি ক্যাম্পাসের বাইরেই থাকছিলেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, সিকিম সরকারের অবসরপ্রাপ্ত ডিজি হিসাবে বিএসএফ গেস্ট হাউসের সুবিধা পান বলেই তিনি সেখানে রয়েছেন এবং উপাচার্যের জন্য বরাদ্দ গাড়ি ব্যবহার করছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের দাবি, ন্যূনতম প্রয়োজনীয় বিষয় হিসাবে উপাচার্য গাড়ি, বাংলো নিতেই পারেন। গত ৩০ অক্টোবর উপাচার্য বাংলো পরিদর্শন করেন। সেখানে বাস্তুকার, দফতরের এবং নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে ঠিক হয়, প্রবেশপথের অংশ আর ঢোকার দরজার উপরের আচ্ছাদন মেরামত করতে হবে, রং করতে হবে বাংলোর জানলা এবং কাজ রয়েছে আরও কিছু। সেই মতো আট থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করে গেটের অংশ ঠিক করার কাজ শুরু হয়। বাকি কাজের জন্য ৩১ অক্টোবর ৯৯,৭২৫ টাকার টেন্ডার ডাকা হয়েছে। ৮ নভেম্বর টেন্ডার খোলা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, উপাচার্য কয়েক দিনের মধ্যেই বাংলোয় ঢুকতে চাইছেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে বাংলোয় থাকার ব্যবস্থা দেখে গিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে, মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য অচিন্ত্য সাহা নিজের খরচে কখনও পূর্ত দফতরের বাংলোয়, কখনও হোটেলে থাকছেন বলে খবর। খবর, তিনি কখনও টোটোয়, কখনও কর্মীদের মোটরবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করছেন। অচিন্ত্য সাহা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, উপাচার্য হিসাবে বেতন-সহ বাড়তি সুবিধা মিলবে না। তাই
সে সব নিচ্ছি না। নিজের খরচেই বাইরে থাকছি। কর্মীদের বাইকে যাতায়াত করছি।’’
এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দফতরে গেলে জানানো হয়, তিনি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না। সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের উপাচার্যের দফতরে আসতে নিষেধ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়। এ নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জিত রায় বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অস্থায়ী উপাচার্যেরা বাড়তি সুবিধা পাবেন না। তা মানা হচ্ছে না। এমনকি, বিএসএফের বাংলোয় থাকার জন্য কয়েক হাজার টাকার বিল বিশ্ববিদ্যালয় মিটিয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে রেজিস্ট্রারের দফতরে গিয়েছি। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা বলছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy