অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আছে। বিনা মূল্যে ডায়ালেসিস, সিটিস্ক্যান সহ বিভিন্ন রোগের পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা।
এক থেকে দু’জন চিকিৎসকের উপর নির্ভর করে এই জেলা হাসপাতালের বুক, চোখ, কান, দন্ত, চর্ম চিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ চলছে। প্যাথোলজি বিভাগ এবং ব্লাডব্যাঙ্ক ইউনিটেও দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসক ও কর্মীর অভাবে পরিষবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই বিভাগগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন চিকিৎসক ছুটি নিতেই বন্ধ হয়ে পড়ছে ওই বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা। স্বাভাবিক ভাবে রেফারের সংখ্যা কমানো যায়নি। এই হাসপাতাল থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৪০ জন রোগীকে ১১০ কিমি দূরে মালদহের মেডিক্যালে রেফার করা হয়। অথচ রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উত্তরবঙ্গের মধ্যে চিকিৎসা পরিষেবায় প্রথম স্থানে বালুরঘাট হাসপাতালের নাম। কেন?
হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাসের দাবি, যত সমস্যাই থাক, চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেন, রোগীদের সমস্ত পরিষেবা দেওয়ার। তাঁর কথায়, সাফাইকর্মীর চরম অভাব নিয়েও হাসপাতালকে পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা হয়। সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগের চেষ্টা হচ্ছে। তবে মোট ১১৭ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে হাসপাতালে আছেন মাত্র ৩৬ জন। ভয়াবহ অবস্থা সাফাই বিভাগে। এই হাসপাতালে সাফাইকর্মীর পদ ৫৯ জন। রয়েছেন মাত্র ১৪ জন।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার(জেডিএম) ১৬ জনের মধ্যে রয়েছেন মাত্র ৬ জন চিকিৎসক। চেস্ট মেডিসিনের কোনও ডাক্তার নেই। এ জেলায় উন্নতমানের কোনও নার্সিংহোম না থাকায় বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালের উপর রোগীর ভিড় অনেক। হাসপাতালের চাকরি থেকে সম্প্রতি স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়ে চলে যান সার্জেন শুভাশিস সরকার।
ব্লাডব্যাঙ্ক বিভাগে ৪ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছেন মাত্র দু’জন। বক্ষ বিশেষজ্ঞ দু’জনের থাকার কথা। একজনও নেই। হাসপাতালের পিপি ইউনিটেও দীর্ঘ দিন ধরে কোনও চিকিৎসক নেই। সব মিলিয়ে ১৬ জন চিকিৎসের পদ শূন্য এই জেলা হাসপাতালে। হাসপাতালের একাংশ কর্মীর বক্তব্য, অধিকাংশ চিকিৎসকের বাড়ি বাইরের জেলায়। তাঁরা ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়।
হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা অন্য। কিছু দিন আগে শিশু মৃত্যুকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। গত সপ্তাহে হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে চোখের অসুখে আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখাতে আসেন কৃষক বিকাশ সরকার। তপনের গোফানগর থেকে দিনমজুর মহেশ বর্মন এসেছিলেন বুকের রোগের জন্য। বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় অনেককেই ঘুরে যেতে হচ্ছে। একই অবস্থা কান, চর্ম, অস্থি বিভাগেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy