প্রতীকী ছবি।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে ফের উদ্বেগজনক তথ্য করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। সেই আবহেই ভোট প্রচারেরও বার হতে হচ্ছে রাজ্যের রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের। তাঁদের অনেকে আবার এর মধ্যে করোনায় কাবুও হয়েছিলেন। এই অবস্থায় শিয়রে ভোট নিয়ে তাঁদের এখন ‘শ্যাম রাখি, না কুল রাখি’ অবস্থা।
যেমন, গৌতম দেব। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী কোভিডজয়ী। তিনি বলেন, ‘‘সাবধানতা অবশ্যই অবলম্বন করা উচিত। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আমরা তা মানতে পারছি না। ভিড় বাঁচিয়ে, মুখে মাস্ক পরে জনসংযোগ করা কঠিন। প্রতিষেধক নিতে পারিনি। যখন সময় আসবে নেব।’’
গ্রামীণ এলাকায় প্রচারে গিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের অভিজ্ঞতা, সেখানে মাস্কের ব্যবহার কার্যত নেই। জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় পেশায় চিকিৎসক। তাঁর কথায়, বেশিরভাগ মানুষ যতক্ষণ না প্রতিষেধক পাচ্ছেন ততদিন মাস্ক, দূরত্ববিধি কঠোর ভাব মেনে চলা উচিত। সকলকে প্রতিষেধক দিতে সময়ও লাগবে। তাই নিজেদেরকেই সাবধান হওয়ার উপরেই জোর দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘ভোট প্রচার, জনসভাও হবে। সামঞ্জস্য রেখে চলা কঠিন হলেও সেই চেষ্টা করতে হবে।’’
কংগ্রেসী বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত মনে করেন, এই পরিস্থিতি ভোট করাতে নির্বাচন কমিশন বিধিনিষেধ জারি করবে। তাঁরা সেটা মেনে চলবেন।
একই সঙ্গে অন্যদেরও মেনে চলতে পরামর্শ দেন তিনি। বিশেষ করে শাসক শিবিরে বিধি ভাঙার
প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা
যায় বলে তাঁর অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠভাবে ভোট করানোও একটা চ্যালেঞ্জ। শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোক ভট্টচার্য বৃহস্পতিবারই শিলিগুড়িতে বামেদের মহামিছিলে করেন ব্রিগেড সমাবেশকে সামনে রেখে। তিনিও
কোভিডজয়ী।
তিনি বলেন, ‘‘জনসভা, মিছিল করতেও হবে। আবার সবাইকে বিধিনিষেধ মেনে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। জনসভা, মিছিলেও করোনা বিধি মেনে চলার ব্যানার ফেস্টুন রাখা উচিত। দলের লোকদেরও সেই বার্তা আমরা দিচ্ছি।’’
নেতারা যা-ই বলুন, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে এমনকি শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাতেও ভিড় হচ্ছে যথেষ্ট। সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে না মানা হচ্ছে দূরত্ববিধি, না থাকছে মাস্কের ঘেরাটোপ। স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহারও কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। সেই ভিড় সামলানো হবে কী করে? প্রশ্ন উঠছে, পথেঘাটে প্রচারে যেতে মুখে মাস্ক পরলে ভোটার চিনতে পারবেন
তো?
রাজ্য অবশ্য নতুন স্ট্রেন নিয়ে এর মধ্যেই চিন্তিত। মুখ্যমন্ত্রী এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, আরও কোভিড টিকা তাঁরা কিনতে চান। সেই টিকা তাঁরা রাজ্যের লোককে, বিশেষ করে ভোটের সঙ্গে যুক্তদের বিনামূল্যে দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি মহারাষ্ট্র, কেরল, কর্নাটকের মতো কয়েকটি রাজ্যে নতুন স্ট্রেন থেকে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশ, ওই জায়গাগুলি থেকে কেউ এ রাজ্যে আসতে চাইলে আরটিপিসিআর পরীক্ষা রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়া চাই। কেন না এ রাজ্যেও সংক্রমণ
বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি সহজ হয়নি। তাই তার মধ্যে ভোট প্রচারে সাবধান হওয়াই সমীচীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy