—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বেশ কিছু প্রশ্ন রেখেই ডুয়ার্স-তরাইয়ের চা শ্রমিকদের এ বছরের বোনাস চুক্তি হল। বৃহস্পতিবার রাতেই স্থির হয়েছিল গত বছরের থেকে তিন শতাংশ কমে, ১৬ শতাংশ হারে চা শ্রমিকেরা এ বার বোনাস পাবেন। রুগ্ণ এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানগুলির কী হবে, তা স্থির করতে শুক্রবার ফের বোনাস বৈঠকে বসেন মালিক এবং শ্রমিক পক্ষ। স্থির হয়েছে রুগ্ণ বাগানগুলি ১৩ শতাংশ হারে বোনাস দেবে এবং একেবারেই ধুঁকতে থাকা চা বাগানগুলি ৯ শতাংশ হারে বোনাস দেবে। শ্রমিক সংগঠনগুলি এই চুক্তি মানলেও, সাধারণ শ্রমিকেরা তা মানবেন কি না, প্রশ্ন রয়েছে। সেই সঙ্গে বহু চা বাগান পরিচালকেরা বাগানের ক্ষতির যুক্তি দেখিয়ে ১৩ শতাংশ হারে বোনাস দিতে এখনও অনড় বলে সূত্রের দাবি। সে বাগানগুলিতে বোনাসের সময় অশান্তি তৈরি হবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
চা বাগান পরিচালকেরা প্রথম থেকেই উৎপাদন কম হয়েছে যুক্তি দেখিয়ে গত বছরের থেকে কম হারে বোনাস দেওয়ার প্রস্তাবে অনড়। তাঁদের দাবি, উৎপাদন কম হওয়ায়, চা শিল্পের লাভের একটা বড় অংশ মার খেয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলি ২০ শতাংশ হারে বোনাস দাবি করলেও, আবহাওয়ার খামখেয়াল এবং উৎপাদন কমের যুক্তি মেনে নেয়। বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি সব শ্রমিক সংগঠনই বোনাস চুক্তিতে সই করেছে। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ‘কনসালটেটিভ কমিটি অব প্ল্যান্টেশন অ্যাসোসিয়েশন’-এর (সিসিপিএ) তরফে দাবি, উৎপাদন কমায় চা শিল্প প্রশ্নের মুখে পড়েছে, তার পরেও শ্রমিকদের স্বার্থে বোনাস দেওয়া হচ্ছে এবং দাবি মেনে প্রস্তাবিত হারের বেশি বোনাসে সম্মত হয়েছেন তাঁরা।
এ বছর গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ধাপে-ধাপে তরাই ডুয়ার্সের ১৭৬টি চা বাগান নিয়ে মোট ছ’টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে বোনাস চুক্তিতে সহমতে পৌঁছতে। প্ৰথম বৈঠক ‘ভার্চুয়ালি’ হলেও, বাকি পাঁচটি বৈঠক হয়েছে কলকাতায়। শুক্রবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৭৬টি চা বাগানের মধ্যে ৭১ চা বাগান রুগ্ণ, সেখানে ১৩ শতাংশ হারে এবং কয়েকটি আরও ‘দুর্বল’ চা বাগানে সর্বনিম্ন ৯ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হবে। শ্রমিক সংগঠনের একাংশের মতে, গত বছর বোনাস চুক্তির পরেই ডুয়ার্সের বেশ কয়েকটি চা বাগান বন্ধ হয়ে যায়।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র বরা ওরাওঁয়ের দাবি, “পরিস্থিতি বুঝে সব শ্রমিক সংগঠনই বোনাস হার নিয়ে একমত হয়েছে।” সিটুর আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক বিকাশ মাহালি বলেন, “গত বছরের মতো বোনাস নিয়ে যাতে কোনও অসন্তোষ এ বছর না দেখা যায়, তা দেখতে প্রতিটি বাগানে নেতৃত্বকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।’’ আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ তথা চা শ্রমিক নেতা মনোজ টিগ্গা বলেন, “দীর্ঘ ম্যারাথন বৈঠকের পরে ৩৩টি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সহমত হয়ে ১৬ শতাংশ হারে বোনাসের সিদ্ধান্তকে আমরা মেনে নিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy